National News

‘অশুভ আত্মা’ তাড়াতে তিন মাসের শিশুকে বলি দিল দম্পতি!

পুলিশ জানিয়েছে, জেরার প্রথমে তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন রাজশেখর। শত্রুতার বশে কেউ ও কাজ করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১১:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

ঘরে ‘অশুভ আত্মা’র প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে তিন মাসের শিশুকে বলি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ট্যাক্সিচালক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। হায়দরাবাদের চিল্কানগর জেলার ঘটনা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ওই ট্যাক্সিচালক ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম কেরুকোন্দা রাজশেখর এবং শ্রীলতা। জেরায় অভিযুক্তেরা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের।

ঠিক কী হয়েছিল?

Advertisement

সংসারে আর্থিক টানাপড়েন চলছিল অনেক দিন ধরেই। স্ত্রীর শরীর-স্বাস্থ্যও গত চার বছর ধরে ভাল যাচ্ছিল না। এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কী ভাবে সেই উপায় খুঁজছিলেন রাজশেখর।

আরও পড়ুন: ব্যাগে রাখা বোমা ফেটে ধৃত ২ ডাকাত

বহু পুজো-আর্চা করেও কোনও লাভ হয়নি। ‘অশুভ আত্মা’ থেকে মুক্তি পেতে দিনে দিনে মরিয়া হয়ে উঠছিলেন রাজশেখর। ঠিক সেই সময়েই যোগাযোগ হয় এক তান্ত্রিকের সঙ্গে। রাজশেখরের দাবি, ওই তান্ত্রিকই তাঁকে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় বাতলে দেন।

কী পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই তান্ত্রিক?

পুলিশের কাছে রাজশেখরের দাবি, ওই তান্ত্রিক তাঁকে বলেন কোনও তিন মাসের শিশুর কাটা মুণ্ড নিয়ে বাড়িতে পুজো করতে হবে! এবং এই কাজটা করতে হবে চন্দ্রগ্রহণের দিন।

কুসংস্কার বড় বালাই। রাজশেখরও নেমে পড়েন তাঁর উদ্দেশ্য সফল করতে। কিন্তু শিশু কোথা থেকে পাবেন? তবে রাজশেখরকে এ ব্যাপারে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি।

৩১ জানুয়ারি রাস্তার ধারে ফুটপাতে তিন মাসের শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল এক ভিখারি দম্পতি। সেখান থেকে শিশুটিকে চুরি করেন রাজকুমার। তার পরই সোজা চলে যান মুসি নদীর ধারে। সেখানে ওই শিশুর ধড় থেকে মুণ্ড আলাদা করে দেন। মুণ্ডটাকে একটা প্লাস্টিক ব্যাগে ভরেন। আর ধড়টাকে নদীতে ফেলে দেন। তার পর ওই মুণ্ডটাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন: ‘মোদী কেয়ার’, কেন্দ্র শুনল রাজ্যের মত

বাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রী শ্রীলতা। এর পর দু’জনে শোওয়ার ঘরে ঢুকে যান। তখন রাত প্রায় ৩টে। মুণ্ডটাকে একটা উঁচু জায়গায় রেখে দু’জনে মিলে শুরু করেন ‘শূদ্র পূজা’। পুজো শেষ হওয়ার পর রাজেশখর শিশুর মুণ্ডটা ছাদে নিয়ে গিয়ে রেখে আসেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তান্ত্রিক নাকি রাজশেখরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, মুণ্ডটা দক্ষিণ-পশ্চিম মুখ করে এমন জায়গায় রাখতে হবে, যাতে চাঁদের এবং সূর্যের আলো দুটোই সেটার উপর পড়ে।

পর দিন রাজশেখর ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কাজে। ছাদে কাপড় মেলতে গিয়েছিলেন রাজুর শাশুড়ি। ছাদের কোণায় মুণ্ডটি পড়ে থাকতে দেখে ভয়ে চিত্কার করে ওঠেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাজশেখরকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, জেরার প্রথমে তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন রাজশেখর। শত্রুতার বশে কেউ ও কাজ করেছে বলে দাবি করেন তিনি। গত ৯ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্তকারী দল রাজশেখরের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ দেখতে পায়। রাচাকোণ্ডার পুলিশ কমিশনার এম এম ভগবত জানান, ফরেন্সিক পরীক্ষার পর দেখা যায় ওই রক্ত খুন হওয়া শিশুটিরই। রাজশেখরের আত্মীয়স্বজনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মাঝেমধ্যেই তান্ত্রিকের কাছে যেতেন তিনি। জেরায় রাজশেখরের স্ত্রী শ্রীলতাও পুলিশের কাছে এই কাজে স্বামীকে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেন। এর পরই গ্রেফতার করা হয় তাঁদের দু’জনকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement