ডিজিটাল হচ্ছে, ছাড়ের টাকা ভরবে কে

ডিজিটাল হোক ভারত— এমনটাই চান নরেন্দ্র মোদী। প্রশ্ন হল, টাকা দেবে কোন গৌরী সেন!মোদী স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, এ বার কম নগদেই চলবে অর্থনীতি। অনলাইন বা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটায় উৎসাহ দিতে ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে নানা রকম।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত ও প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৬
Share:

ডিজিটাল হোক ভারত— এমনটাই চান নরেন্দ্র মোদী। প্রশ্ন হল, টাকা দেবে কোন গৌরী সেন!

Advertisement

মোদী স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, এ বার কম নগদেই চলবে অর্থনীতি। অনলাইন বা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটায় উৎসাহ দিতে ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে নানা রকম। তা সে রেলের টিকিটই হোক বা পেট্রোল পাম্পে তেল ভরানো। হেঁয়ালি হল, সেই ছাড়ের টাকা মেটাবে কে? অভিযোগ, অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রক ছাড় ঘোষণা করেই দায় সারছে। ভর্তুকির টাকা কে মেটাবে, তার সদুত্তর নেই। আর ছাড় নিয়ে ধাঁধার জালে আটকা পড়েছে রেলের অধীন স্বশাসিত সংস্থা আইআরসিটিসি থেকে তেল সংস্থাগুলি।

অনলাইনে টিকিট কাটলে এত দিন স্লিপার ও বাতানুকূল শ্রেণিতে টিকিট-পিছু যথাক্রমে কুড়ি ও চল্লিশ টাকা সার্ভিস চার্জ নিত আইআরসিটিসি। অনলাইনে টিকিট কাটায় উৎসাহ দিতে এ বার বাজেটে তা তুলে দিয়েছেন জেটলি। এতেই মাথায় হাত আইআরসিটিসি কর্তাদের। তাঁরা বলছেন, রেলে দূরপাল্লার প্রায় ৭০ শতাংশ টিকিটই বিক্রি হয় ইন্টারনেটে। সার্ভিস চার্জ থেকে প্রতি দিন দু’কোটি টাকা ঘরে ঢুকত আইআরসিটিসি-র। যার অর্ধেক নিজেরা রেখে বাকি এক কোটি টাকা রেলের হাতে তুলে দিত তারা। আইআরসিটিসির দবি, নতুন সিদ্ধান্তে তারা ও রেল প্রতি বছর প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা করে, অর্থাৎ মোট ৭০০ কোটির আয় হারাতে চলেছে।

Advertisement

আইআরসিটিসি কর্তারা জানান, সংস্থার ওয়েবসাইটের মান বাড়ানোর কাজে এই টাকার অর্ধেকের বেশি খরচ করার কথা ছিল। বিপুল চাপ সামলে আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটটি যাতে দ্রুত পরিষেবা দিতে পারে, তার জন্য সেটিকে ঢেলে সাজার কাজ শুরু হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, পাঁচ বছর ধরে তথ্য-প্রযুক্তি পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণে ১৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। এই টাকার বড় অংশই আসত সার্ভিস চার্জ থেকে। অতএব সমস্যা।

কার্ডে তেল কিনলে ০.৭৫% ছাড় মিলবে বলে জানান জেটলি। এই সুবিধা মিলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কেউ কার্ডে তেলের দাম মেটালে ব্যাঙ্ক ‘ফি’ আদায় করে পেট্রোল পাম্পের কাছে। একে বলে ‘মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট’ বা এমডিআর। এই টাকা আমজনতার থেকেই নিত পাম্পগুলি। পরে তা যেত ব্যাঙ্ক ও ভিসা-মাস্টার কার্ডের মতো সংস্থা এবং যারা কার্ডে লেনদেনের যন্ত্র বসাচ্ছে, তাদের ঝুলিতে। কিন্তু সরকার এমডিআর আদায়ে বাধা দেওয়ায় কার্ডে তেলের দাম নিতেই অস্বীকার করেছিল পেট্রোল পাম্পগুলি। অবশেষে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের হস্তক্ষেপে তেল সংস্থাগুলি এই দায় নিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু তেল মন্ত্রক থেকে সাহায্য মিলবে কি না, সে বিষয়ে সংস্থাগুলি নিশ্চিত নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement