—ফাইল চিত্র।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে উপত্যকায় বন্দি মেহবুবা মুফতি। তা নিয়ে এ বার কেন্দ্রের কাছে জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, চিরদিন কাউকে বন্দি করে রাখা যায় না। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আর কত দিন এ ভাবে বন্দি করে রাখা হবে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তা-ও জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
গত বছর ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব করে সেখানকার প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতি-সহ উপত্যকার বহু রাজনীতিককে বন্দি করা হয়। তার পর থেকে একে একে ফারুক, ওমর-সহ অনেককে মুক্তি দিলেও, এখনও বন্দি করে রাখা হয়েছে মেহবুবা মুফতিকে।
তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব মেহবুবা-কন্যা ইলতিজা। বেআইনি ভাবে তাঁর মাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। আদালতের সামনে মেহবুবাকে পেশ করে যাতে তাঁর বন্দিদশা নিয়ে বিচার শুরু করা যায় তার জন্য শীর্ষ আদালতে হেবিয়াস কর্পাস আবেদন জমা দিয়েছিলেন ইলতিজা। মঙ্গলবার তার শুনানিতেই কেন্দ্রের উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন তোলে আদালত।
আরও পড়ুন: মোদী সরকারের সমালোচনার ‘শাস্তি’! ভারতে সব অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, হাত গোটাল অ্যামনেস্টি
এ দিন বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কউলের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছিল। সেখানে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে আদালত বলে, ‘‘কাউকে চিরকাল বন্দি করে রাখা যায় না। সরকারের কাছে জানতে চাই, ঠিক কত দিন পর্যন্ত এই বন্দিদশা চলতে পারে। সর্বোচ্চ কত দিন পর্যন্ত এক জনকে আটকে রাখা যায় এবং এ ক্ষেত্রে ঠিক কত দিন এই বন্দিদশা চালিয়ে যেতে চান আপনারা।’’
ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারায় প্রথমে ছ’মাসের জন্য মেহবুবা মুফতিকে বন্দি করা হয়েছিল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর সেই বন্দিদশার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন ফের নতুন নির্দেশিকা জারি করে তাঁর উপর জন নিরাপত্তা আইন (পিএসএ) প্রয়োগ করা হয়, যার আওতায় আইন শৃঙ্খলার কথা বজায় রাখতে বিনা বিচারে কাউকে এক বছর পর্যন্ত বন্দি করে রাখা যায়। আবার দেশে বন্দির আচরণ বিবেচনা করে, জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনও বন্দিকে বিনা বিচারে দু’বছর পর্যন্তও আটক করে রাখা যায়।
আরও পড়ুন: ১৫ দিনের লড়াই শেষ, উত্তরপ্রদেশে ‘গণধর্ষিতা’ তরুণীর মৃত্যু দিল্লিতে
মেহবুবা-কন্যার অভিযোগ, শর্তসাপেক্ষে তাঁর মাকে মুক্তি দিতে রাজি ছিল সরকার। তার জন্য জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে কোনও রকম রাজনৈতিক মন্তব্য করবেন না, কোথাও কোনও বক্তৃতা করবেন না এবং কোনও জন সমাবেশে অংশ নেবেন না বলে বিশেষ বন্ডে সই করতে হত তাঁকে। তাতে রাজি না হওয়াতেই মেহবুবাকে আটকে রাখা হয়েছে। মেহবুবা যাতে দলের বৈঠকে যোগ দিতে পারেন, তার জন্যও আদালতের অনুমোদন চেয়েছিলেন ইলতিজা। কিন্তু এ দিন আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে মেহবুবার বিষয়টি নিয়ে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শও দিয়েছে আদালত।