ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলা নিয়ে জবাবদিহি চাইতে গিয়ে পাল্টা ঝড়ের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এই ঝড় অবশ্য বাইরের নয়। উঠেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অন্দরমহল থেকেই। অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যায় জেরবার গোয়েন্দা ব্যুরোর নিচুতলার কর্মীরা উচ্চতন অফিসারদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে রাজনাথের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এক স্মারকলিপিতে নিচুতলার কর্মীরা পরিকাঠামোগত সমস্যার দিকগুলি তুলে ধরেছেন। সেইসঙ্গে উচ্চপদস্থ অফিসারদের দুর্ব্যবহার, বৈষম্য ও বঞ্চনার বিষয়েও জানিয়েছেন রাজনাথকে। পরিস্থিতি সামলাতে সুকমা নিয়ে তদন্ত করতে একটি কমিটি গড়েছেন রাজনাথ।
ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের শক্তিশালী ঘাঁটি হল সুকমা। আজ রাজনাথকে জানানো হয়েছে, সেই সুকমায় গোয়েন্দাবাহিনীর নিচুতলার কী হাল! সূত্রের খবর, ওই জেলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর মাত্র ছ’জন কাজ করেন। একজন সহকারী ডিরেক্টরের অধীনে তিন জন ফিল্ড অফিসার রয়েছেন। এছাড়া বাকি দু’জন হলেন চালক ও নিরাপত্তাকর্মী। ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মতো মাওবাদী উপদ্রুত রাজ্যগুলির সংযোগকারী ওই জেলায় সংখ্যার দিক থেকে যে কর্মীর অভাব রয়েছে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কর্মীরা সরব হয়েছেন পরিকাঠামোর অভাব নিয়েও। অভিযোগ উঠেছে বাহিনীর মধ্যে চলতে থাকা স্বজনপোষণের। যেমন সুকমায় যে সহকারী ডিরেক্টর কর্মরত রয়েছেন তিনি ডাক বিভাগের কর্মী। তাঁর কোনও ধরনের গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ নেই। কেবল ছত্তীসগঢ়-ওড়িশা সীমান্তে বাড়ি হওয়ার সুবাদে এবং তাঁর বাড়ি যাতাযাতের সুবিধে হবে বলেই ওই অফিসারকে ওই জেলায় বদলি করা হয়েছে বলে দাবি কর্মীদের একাংশের। এর সঙ্গেই রাজনাথের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে আইপিএস ও নন আইপিএস অফিসারদের ঝগড়াও। বর্তমানে গোটা দেশে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগে প্রায় দশ হাজার কর্মী থাকলেও, তাদের মাথায় রয়েছেন মাত্র একশো জন আইপিএস। নিচুতলার কর্মীদের প্রতি শীর্ষ আমলাদের মনোভাব নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছে মন্ত্রকের ঘরে। কোনও ফল না হওয়ায় এ বার সেই দুর্ব্যবহার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নিচুতলা।