গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রায় দু’দশক পরে বলিউড বিদ্বেষের ধারা ভাঙল মণিপুর। ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রদর্শন হল হিন্দি সিনেমার। জনজাতি সংগঠন ‘হামার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (এইচএসএ) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুরাচাঁদপুর জেলার রেংকাই লামকা এলাকায় একটি হিন্দি সিনেমার প্রদর্শনের আয়োজন করেছে।
প্রায় এক দশক আগে মণিপুরের জনতার কাছে হিন্দি ছবির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ থেকে সরে আসার আবেদন জানিয়েছিলেন সে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ওক্রাম ইবোবি সিংহ। কিন্তু তাতে ফল মেলেনি। মণিপুরের কন্যা মেরি কমের জীবনী অবলম্বনে তৈরি বলিউডের সিনেমার মূল সংস্করণটি মুক্তি পায়নি সে রাজ্যে। ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করা প্রিয়ঙ্কা চোপড়া এবং নির্মাতাদের অনুরোধের ফল মেলেনি।
গোষ্ঠীহিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরে জনজাতি সংগঠন এইচএসএ-র এই উদ্যোগ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে শেষ বার বলিউড ছবি ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ প্রদর্শিত হয়েছিল মণিপুরে। সেই ঘটনার কিছু দিন পর থেকেই জঙ্গি সংগঠনগুলির হুমকি ও সামাজিক সংগঠনগুলির মদতে মণিপুরে হিন্দি ছবির প্রদর্শন কমতে শুরু করেছিল।
২০০০ সালের অক্টোবরে ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি অফ মণিপুর’-সহ বেশ কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠী এবং সামাজিক সংগঠন হিন্দি ছবির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর পরে ভারতীয় ছবির ‘আগ্রাসন’ রুখতে ধাপে ধাপে প্রেক্ষাগৃহ, কেব্ল চ্যানেলে হিন্দি ছবি দেখানো গায়ের জোরে বন্ধ করা হয়। পরে দফায় দফায় হাজার হাজার সিডি ‘বাজেয়াপ্ত’ করে আন্দোলনকারীরা। বস্তুত সে সময় থেকেই মণিপুরের কোথাও হিন্দি ছবির প্রদর্শন হত না। খোলাখুলি বিক্রি হত না সিডি।