কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা
সকলের জন্য চিকিৎসা প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’ নিয়ে দুর্নীতি রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই প্রকল্পের অধীনে স্বাস্থ্য বিমা রয়েছে এমন রোগীর কাছ থেকে প্যাকেজের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল থেকে ফৌজদারি মামলা পর্যন্ত করা হবে বলে জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
গত ১৫ অগস্ট থেকে দেশের ১৬টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে গোটা দেশে। আপাতত ১৬টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে যাঁরা বিমার সুবিধে পাবেন, তাঁদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। মূলত জাতিগত শুমারির ভিত্তিতেই সেই কাজ করা হচ্ছে। গত দশ দিনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শুরু থেকেই দুর্নীতি রুখতে চাইছে মন্ত্রক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা আজ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কোনও ওয়েবসাইটে কারও নাম নথিভুক্ত করাতে হবে না। কোনও হাসপাতাল বা বিমা সংস্থার কাছেও নাম লেখানোর প্রয়োজন নেই। নাম নথিকরণের কাজ সরকার করছে। যাঁদের নাম তালিকায় উঠবে তাঁদের পরিবারের প্রধানের নামে একটি পরিচয় পত্র চলে আসবে। যা দেখিয়ে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় থাকা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পর্যন্ত বিনামূল্যে পাবেন সাধারণ মানুষ।
হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার নামে বাড়তি অর্থ খরচ রুখতেও সক্রিয় হয়েছে মন্ত্রক। নড্ডা জানান, ওই বিমার আওতায় প্রতিটি রোগের ক্ষেত্রে কত খরচ হতে পারে, তা প্যাকেজে বলা থাকবে। স্বাস্থ্য বিমা রয়েছে এমন কোনও রোগীর কাছ থেকে প্যাকেজের অতিরিক্ত অর্থ দাবি করার অভিযোগে উঠলে ও তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলাও করা হবে বলে জানিয়েছেন নড্ডা।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। ক্ষমতায় ফিরতে এই প্রকল্পটিকেই তুরুপের তাস করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। দেশের ১০ কোটি ৭৪ লক্ষ গরিব পরিবারকে বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মোদী সরকার। যার অর্থ, এর সুবিধা পাবেন ৫৫ কোটি মানুষ। প্রথমে একাধিক রাজ্য আপত্তি জানালেও আপাতত রাজ্য-কেন্দ্র মিলিয়ে ২৯টি রাজ্য ওই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে রাজি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলা ও মিজোরামের ১টি জেলাতে ওই প্রকল্প শুরু হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, একাধিক রাজ্যে আগে থেকেই নিজেদের স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু ছিল। রাজ্য ও কেন্দ্র হাত মেলানোয় ১০ কোটির বদলে ভবিষ্যতে দেশের ১৭ কোটি পরিবার অর্থাৎ প্রায় ৮৫ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, পরবর্তী পদক্ষেপে দেশের সব মানুষকে অর্থাৎ মূলত মধ্য ও উচ্চবিত্তদের সরকারি স্বাস্থ্য বিমার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের।