সংখ্যাটা পাল্টালো না। ২০১৪-র কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন মাত্র ৬ মহিলা। এ বারেও তাই। এর মধ্যে স্মৃতি ইরানি, নির্মলা সীতারমন, হরসিমরত কৌর বাদল ২০১৪-র মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন। এ বারের মোদীর মন্ত্রিসভার নতুন তিন মহিলা মুখ হলেন, সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি, রেনুকা সিংহ এবং বাংলা থেকে দেবশ্রী চৌধুরী। রাজনীতিতে আসার আগে কী করতেন তাঁরা? দেখে নিন
নির্মলা সীতারমন- ভারতের প্রথম পূর্ণ মহিলা অর্থমন্ত্রী হলেন তিনি। ইন্দিরা গাঁধীর পর দ্বিতীয় মহিলা প্রতিরক্ষামন্ত্রীও ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং বিজেপির মুখপাত্র হন। এরপর ২০১৪ সালে তিনি রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে তাঁকে প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নয়া মন্ত্রিসভাতেও তিনি ‘বিগ ফোর’-এর সদস্য হলেন।
অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন নির্মলা সীতারমন। দিল্লির জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রথম জীবনে লন্ডনের রিজেন্ট স্ট্রিটের একটি হোম ডেকর দোকানে সেলসপার্সনের কাজ করতেন তিনি। কিন্তু খুব বেশি দিন তাঁকে এই কাজ করতে হয়নি। নিজের কর্মদক্ষতা এবং শিক্ষার জোরে লন্ডনের এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ার অ্যাসোসিয়েশনে অ্যাসোসিয়েট ইকোনমিস্ট হিসাবে নিযুক্ত হন। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
স্মৃতি ইরানি- যে ৫৮ জন শপথ নিলেন এ বারের নয়া মন্ত্রিসভায়, তার মধ্যে কনিষ্ঠতম হলেন স্মৃতি ইরানি। আগে শিক্ষা, বস্ত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলেছেন তিনি। এ বারেও বস্ত্রমন্ত্রী হয়েছেন। সঙ্গে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের গুরুভারও দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
জানেন কি, মডেল, অভিনেত্রী, রাজনীতিক স্মৃতির সঙ্গে বাংলার একটি যোগসূত্র রয়েছে? স্মৃতি ইরানির মা বাঙালি। নাম শিবানী বাগচি। বাবা পঞ্জাবি-মরাঠি। ছোট থেকেই স্মৃতি সঙ্ঘের আদর্শে অনুপ্রাণিত। তাঁর ঠাকুরদা আরএসএসের একজন স্বয়ংসেবক ছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি ভাল অভিনেত্রী হিসেবেও স্মৃতির জনপ্রিয়তা রয়েছে। ১৯৯৮ সালে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন স্মৃতি।
হরসিমরত কৌর বাদল- ২০০৯ সালে রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পঞ্জাবের ভাতিন্ডার সাংসদ হযেছেন তিনি। মোদীর মন্ত্রিসভায় এ বারে খাদ্য প্রক্রিয়াকরন মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
হরসিমরত পঞ্জাবের শিরোমনি অকালি দলের প্রথম সারির নেতা। তাঁর স্বামী সুখবীর সিংহ বাদল পঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রী। মহারাজা রণজিত সিংহের সেনাবাহিনীর জেনারেল ছিলেন আত্তার সিংহ মাঝিটিয়া। এই আত্তার সিংহেরই বংশধর হরসিমরত কৌর বাদল।
সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি- উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরের সাংসদ। মোদীর মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। ২০১৪ সালে তিনি খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এ বারে তিনি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশের হামিরপুরে জন্ম সাধ্বীর। খুব কম বয়সে তিনি সন্ন্যাস নেন। রাজনীতিতে বারবারই বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
রেনুকা সিংহ- ছত্তীশগঢ়ের সারগুজার প্রথম সাংসদ হলেন তিনি। বিজেপির অন্যতম শক্তিশালী আদিবাসী মুখ রেনুকা। সারগুজায় প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেসকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার তাঁর কৃতিত্ব অস্বীকার করতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব। এ বারে তাই প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন।
৫৮ বছরের রেনুকা সিংহ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। রামানুজনগরের মণ্ডল সভাপতি হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়।
দেবশ্রী চৌধুরী- কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাংলার একমাত্র মহিলা মন্ত্রী। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন সবার শেষে শপথ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। দেবশ্রী চৌধুরী কলকাতার বাগুইআটিতে থাকেন।
এ বারে রায়গঞ্জ থেকে ভোটে লড়ে সাংসদ হয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির অধীনে প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন দেবশ্রী চৌধুরী। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক সামলানো।