হাথরসের ঘটনাস্থলে তদন্তে সিবিআই আধিকারিকেরা। ছবি: পিটিআই।
অপরাধের জায়গায় হাথরসের নির্যাতিতার মা এবং ভাইকে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ তথা খুনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করল সিবিআই। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশ আধিকারিক-সহ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও। অপরাধস্থল ঘুরে দেখার পাশাপাশি বুলগড়হী গ্রামে নির্যাতিতার বাড়িতেও যান তদন্তকারীরা।
সিবিআই সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে হাথরসের গণধর্ষিতার বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। সেখানে নির্যাতিতা দলিত তরুণীর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এর পর তাঁকে সঙ্গে নিয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিবিআইয়ের একটি দল।
গণধর্ষিতা তরুণীর মা অসুস্থবোধ করায় এ দিন তাঁকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই পরিবারের দুই সদস্য। ফেরার পথে অ্যাম্বুল্যান্স থেকেই ওই মহিলাকে অপরাধস্থলে নিয়ে যান তদন্তকারীরা। ঘটনার পর থেকেই ওই দলিত তরুণীর ভাইয়ের অভিযোগ ছিল, তাঁদের বাড়ির কাছে একটি বাজরার ক্ষেতে গণধর্ষণের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল নির্যাতিতাকে। এ দিন সেই জায়গাও খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে ৩ দলিত মেয়ের উপর অ্যাসিড হামলা, প্রশ্নে যোগীর প্রশাসন
গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরসের চার উচ্চবর্ণের যুবক ওই দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। তরুণীকে উদ্ধারের সময় তাঁর শরীরে নানা জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন ছিল। এমনকি প্রচণ্ড মারধরের ফলে তাঁর শিরদাঁড়ায় গুরুতর আঘাতও লেগেছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার পর স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও পরে তাঁকে দিল্লি সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৫ দিন পর সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে ফেটে পড়ে নাগরিক সমাজ থেকে বিরোধী দলগুলি।
আরও পড়ুন: মোদীর মুখে নারীশক্তি, হাথরস-কটাক্ষ রাহুলের
গণধর্ষণের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করার অভিযোগও ওঠে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, রাতের অন্ধকারে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগেও বিদ্ধ হয় প্রশাসন। এমনকি, গণধর্ষণের হয়নি— এমন তত্ত্বও প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে তারা। এই আবহে শাসক বিজেপি শিবিরের একের পর এক নেতার বিতর্কিত মন্তব্যও বিপত্তি বাড়ায় যোগী সরকারের। সব মিলিয়ে প্রবল জনরোষের পর অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব করতে কার্যত বাধ্য হন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এর আগে অবশ্য ৩০ সেপ্টেম্বর স্পেশাল তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তবে দেশজোড়া বিক্ষোভের আবহে আদিত্যনাথের প্রস্তাব মেনে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। নির্যাতিতার ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ঘটনায় ধৃত চার জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করে সিবিআই।