কৃতজ্ঞতা। নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে হামিদ আনসারি।
মঙ্গলবারই ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ছ’বছর পর দেশে ফিরেছেন হামিদ আনসারি। আর বুধবারই মাকে সঙ্গে নিয়ে চলে এলেন নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের জেল থেকে তাঁকে মুক্ত করতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন সুষমা। কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রীর এই ভূমিকার কথা মাথায় রেখে মাকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার সকালে ধন্যবাদ জানালেন সুষমা স্বরাজকে। সেখানেই তৈরি হল আবেগঘন মুহূর্ত।
দেখা করার মুহূর্তে হামিদ আনসারির মা ফৌজিয়া আনসারিকে জড়িয়ে ধরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ফৌজিয়াকে তখন বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার দেশ মহান, আপনিও মহান, আমার ছেলেকে মুক্তি দিতে আপনিই সব কিছু করেছেন।’’ফৌজিয়াকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিতে দিতে সুষমাও বলতে থাকেন, পাকিস্তানের জেলে হামিদকে কতটা কষ্টে থাকতে হয়েছে। হামিদকেও বলতে শোনা যায়, ‘‘দেশে ফিরে আমার ভীষণ ভাল লাগছে। আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছি। ’’
তাঁর বাবা নেহাল আনসারিও সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘‘ আমাদের কাছে হামিদ আবার নতুন করে জন্ম নিল। এই ক’টা বছর আমরা কোনও উৎসব করিনি। আজ থেকেই আমরা আবার উৎসবে মাতবো।’’
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে পাক জেলে মুম্বইয়ের যুবক! মুক্তি পেলেন ছ’বছর পর
২০১২ সালে পাক- আফগান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কোহাট শহরে হাজির হয়েছিলেন হামিদ আনসারি। সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া নিজের ভালবাসার মানুষটির কাছে পৌঁছনোর জন্যই এই ঝুঁকি নিয়েছিলেন হামিদ। বেআইনি নথি নিয়ে ঢোকার অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান। আইএসআই-এর অফিসাররা ধরেই নিয়েছিলেন, হামিদ ভারতের গুপ্তচর। ২০১৫-র ১৫ ডিসেম্বর, পাক সামরিক আদালতের রায়ে হামিদের তিন বছর কারাদণ্ড হয়।
আরও পড়ুন: সন্তানের নাম অ্যাডল্ফ হিটলার রেখে গারদে বাবা-মা!
এর পর থেকেই শুরু হয় হামিদকে দেশে ফেরানোর লড়াই। যে লড়াইতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে ভারত ও পাক বিদেশ মন্ত্রক, ভারত ও পাক সংবাদমাধ্যম, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী এবং মানবাধিকার সংস্থা। হামিদকে মুক্ত করতে তাঁর মা ফৌজিয়ার আবেদনে সাড়া দিয়ে শেষ পর্বে বিশেষ উদ্যোগী হন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও। এর পরই মঙ্গলবার ওয়াঘা বর্ডার দিয়ে ছ’বছর পর ভারতের মাটিতে পা রাখেন মুম্বইয়ের ম্যানেজমেন্ট স্কুলের শিক্ষক ৩৩ বছরের হামিদ।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)