কেন্দ্রের কাছে ১ হাজার কোটি চান হাগ্রামা

মন্ত্রীদের টাকা নেওয়ার পক্ষে কথা বলে আগেই বিজেপি জোট সরকারকে বিপাকে ফেলেছিলেন হাগ্রামা। এ বার সরাসরি কেন্দ্রের কাছে ১ হাজার কোটি টাকা চাইলেন তিনি!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০৩:১১
Share:

মন্ত্রীদের টাকা নেওয়ার পক্ষে কথা বলে আগেই বিজেপি জোট সরকারকে বিপাকে ফেলেছিলেন হাগ্রামা। এ বার সরাসরি কেন্দ্রের কাছে ১ হাজার কোটি টাকা চাইলেন তিনি!

Advertisement

১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ বড়োভূমিকে দেওয়া হবে— বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের কাছ থেকে তেমন প্রতিশ্রুতি পেয়েই বিজেপির হাত ধরেছিলেন বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা। অভয় দিয়েছিলেন, বড়োভূমির পুরোটাই দখল করবে বিজেপি। কথাও রাখেন তিনি। কিন্তু বিজেপি এখনও কথা রাখেনি। তাই ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন হাগ্রামা। অসম গণ পরিষদের পর এ বার বিপিএফও বেগ দিচ্ছে বিজেপিকে।

অগপ ও বিজেপির মধ্যে হিন্দু বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব, তৈলক্ষেত্রের নিলাম, চাংসারিতে এইমস এবং ভ্যাট তথা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধ চলছে। অগপ বিধায়ক তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেছেন, বিজেপি জোট শরিকদের মতামত না নিয়েই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি, তৈলক্ষেত্র নিলাম, গ্যাসে ভর্তুকি তোলার সিদ্ধান্ত সমর্থন করে না অগপ।

Advertisement

দু’দিন আগে হাগ্রামা জানিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বিজেপির কোনও মতভেদ নেই। সব ঠিক চলছে। কিন্তু তারপরেই তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়ার ডাক দিলেও কেউ এসে বিপিএফের দুই মন্ত্রীকে ‘মাল’ (টাকা) দিতে চাইলে, তা নিয়ে নেওয়া উচিত।
তবে নিজে থেকে টাকা চেয়ে নেওয়া ঠিক নয়।’’ এমন মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠলেও স্বভাবসিদ্ধ মেজাজে অটল হাগ্রামা।

এখানেই শেষ নয়। হাগ্রামা আরও জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে রাজ্য সরকার বিটিএডির জন্য অন্তত ৫০০ কোটি টাকা না দিলে বাজেট মেনে নেওয়া হবে না।

তাঁর মন্তব্য, ‘‘আগের সরকার বাজেটে বিটিএডির জন্য ৪৪৬ কোটি টাকা ধার্য করেছিল। এ বার অন্তত ১০ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। কিন্তু আমি জেনেছি বাজেটে বিটিএডির উন্নয়নে মাত্র আড়াইশো কোটি টাকা রাখা হয়েছে। ওই টাকায় কিছুই করা সম্ভব নয়।’’ হাগ্রামার মতে অরুণাচলপ্রদেশ, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়ের থেকেও বড়োভূমির জনসংখ্যা বেশি। তাই জনসংখ্যার নিরিখেই টাকা বরাদ্দ করা হোক।

বিজেপির কাছ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে কংগ্রেসের প্রাক্তন জোট শরিক বিপিএফ বিজেপির হাত ধরে। নির্বাচনী প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মঞ্চের উপরেই সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন হাগ্রামা। প্রধানমন্ত্রী তারপরেও ভাষণে সে কথা উল্লেখ না করায় তিনি রেগেও যান। পরে অমিত শাহ এসে কোকরাঝাড়ের জনসভায় ঘোষণা করে গিয়েছিলেন— ‘‘হাজার কোটির বেশিই পাবে বড়োভূমি।’’ হাগ্রামার প্রশ্ন, ‘‘কোথায় গেল সেই হাজার কোটি? এ ভাবে কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুপ করে গেলে চলবে না।’’

অন্য দিকে, পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবিতে ফের সরব হয়েছে বড়ো ছাত্র সংগঠন আবসু। এ বার একা আবসু নয়, পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে আন্দোলনকারী আরও কয়েকটি সংগঠন একত্রে গড়ে তুলেছে ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন ফর নিউ স্টেটস’। যৌথ মঞ্চের তরফে পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবি করা আবসু সভাপতি প্রমোদ বড়ো, আলোচনাপন্থী এনডিএফবির সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ বসুমাতারি, বিদর্ভ রাজ্য আঘাইয়ের কার্যবাহী সভাপতি স্বপ্নজিৎ সান্যাল, কুকি রাজ্য দাবি কমিটির সভাপতি হেজং হাওকিপ, স্বশাসিত কার্বি রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করা যৌথ মঞ্চের চেয়ারম্যান খরসিং টেরণ, পিপল্স জয়েন্ট অ্যাকশন ফোরামের তরফে রাকেশ বড়োরা একজোট হয়ে দাবি করেন— লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি পৃথক রাজ্য দাবি কমিটির আবেদন বিবেচনা করার আশ্বাস দিলেও ক্ষমতায় এসে তারা কিছু করেনি। নতুন রাজ্য গড়লে তবেই অনুন্নত এলাকাগুলির কাছে উন্নয়নের টাকা, বিকাশ প্রকল্পগুলির সুবিধা ও প্রশাসনিক সুবিধাগুলি পৌঁছবে।

প্রমোদবাবু জানান, তাঁরা স্বাধীনতা দিবসে পৃথক বড়ো রাজ্যের দাবিতে গুয়াহাটিতে বিরাট মিছিল বের করবেন। তাতেও কাজ না হলে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে অনির্দিষ্টকালের অনশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement