প্রতীকী ছবি।
সিকিওরিটি চেকিংয়ের নামে দিল্লিগামী উড়ানে অশীতিপর নাগা মহিলাকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠল গুয়াহাটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় থাকা সিআইএসএফ কর্মীদের বিরুদ্ধে।
মালো কিকন নামে ওই মহিলা অভিযোগ জানান, দেড় দশক আগে তাঁর হিপ ইমপ্ল্যান্ট করানো হয়েছিল। গত ১৫ বছর ধরে তা নিয়েই যাতায়াত করছেন তিনি। কখনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার নিরাপত্তার নামে তাঁকে শুধু উপরের কাপড়ই নয়, অন্তর্বাস, এমনকি ডায়পার পর্যন্ত খুলতে বাধ্য করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ঘটনা নিয়ে তিনি এখনও ত্রস্ত, লজ্জিত ও ক্ষিপ্ত।
মালোর কন্যা, নাগাল্যান্ডের খ্যাতনামা নৃতত্ত্ববিদ ডলি কিকন জানান, নিরাপত্তাকর্মীরা সতর্কতামূলক বিপ শব্দ হওয়ার পরে টাইটানিয়াম হিপ ইমপ্ল্যান্টের খোঁজে মাকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করেন। আপত্তি করায় তাঁর সঙ্গে থাকা নাতনীকেও হেনস্থা করা হয়। এমনকী অভিযোগপত্র কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর হাত থেকে। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে অভিযোগপত্রের ছবিও তুলতে দেওয়া হয়নি। গোটা বিষয়টি নিয়ে টুইট করে অভিযোগ জানান ডলি।
মালো বলেন, মেশিনে বিপ শব্দের সঙ্গে আমি এত বছর ধরে পরিচিত। বরাবরই আমি ইমপ্ল্যান্টের কথা জানাই ও সেলাই দেখিয়ে দিই। কিন্তু এ বারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মহিলা অফিসার নাছোরবান্দা ছিলনে। আমি লজ্জায় কাঁদছিলাম। কিন্তু তাতেও পাত্তা দেননি ওই নিরাপত্তাকর্মী। এই ভাবে বয়স্ক মানুষকে হেনস্থা ও অপমান করা হবে, তা ভাবতে পারছি না। এখনও ঘটনার কথা ভেবে আমার হাত-পা কাঁপছে।
ডলির টুইটের পরে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেয়। সেখানে বলা হয়, শরীরে ধাতব পাত থাকায় নিরাপত্তাকর্মী ভদ্র ভাবেই ওই বয়স্ক মহিলাকে বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা পরীক্ষার
কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে মেয়েকে জানান। মেয়ে ঘটনাটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন। পরে তিনি ও তাঁর স্বামী বিমানবন্দরে এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ও বিমানবন্দরের মুখ্য কার্যবাহী কর্তা উৎপল বরুয়ার সঙ্গেও দেখা করেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ায় তাঁরা পরে ধন্যবাদও দেন। লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা এর পর থেকে নজর রাখবেন, যেন এমন অবাঞ্ছিত ঘটনা ভবিষ্যতে আর না ঘটে।