অধিকার: নির্বাচনের প্রথম দিনে চলছে ভোটদান। শনিবার গুজরাতের সুরেন্দ্রনগরে। ছবি: রয়টার্স।
জেতার জমি তৈরি ছিল। কিন্তু আজ ভোটের দিনে গুজরাতে বিজেপির ২২ বছরের সরকারকে বদলাতে কত মানুষকে সঙ্গে পেল কংগ্রেস— তা নিয়ে সংশয় থাকলই। নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে প্রথম দফায় যত ভোট পড়ল, তা গত বিধানসভার ভোটদানের অঙ্ককে ছাড়াতে পারেনি। তাই অনেকেই বলছেন, পরিবর্তনের জোয়ার আদৌ এল কি?
রাজ্যের ১৮২ আসনের যে ৮৯টিতে ভোট হয়েছে, গত বিধানসভায় তার ৬৭টিই জিতেছিল বিজেপি। তবে সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ ও দক্ষিণ গুজরাতের এই কেন্দ্রগুলিতে এ বার কংগ্রেসের জন্য ছিল প্রবল সম্ভাবনা। সৌরাষ্ট্র ও সুরাতের মতো এলাকায় পটেলদের ক্ষোভের পাহাড়ের উপরে বসেছিল বিজেপি। হার্দিক পটেলের পাতিদার সংরক্ষণ আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে রাহুল গাঁধী মোদী-বিরোধী হাওয়াকে জোরালো করে তুলেছিলেন। সুরাতের ১২ টি কেন্দ্রে হীরে ও বস্ত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের আঁচ সামলাতে হচ্ছিল বিজেপিকে। নোট বাতিল আর জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের অসন্তোষ উস্কে দিয়ে জোরালো প্রচার চালিয়েছিলেন রাহুল। আর উনায় গো-রক্ষকদের হাতে দলিত নিগ্রহের ঘটনার পরে দলিত উত্থানের নেতা জিগ্নেশ মেবাণীর সমর্থন তো রয়েইছে।
তাই অনেকেই ভেবেছিলেন, ভোটের শুরুতেই জনজোয়ার পরিবর্তনের বার্তা দিতে শুরু করবে। কিন্তু প্রথম দফার ভোটের পরে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গড়ে ভোট পড়েছে ৬৮ শতাংশ। যা ২০১২ সালের অঙ্ক ৭১ শতাংশের থেকে কম। অনেকেই ধারণা, ভোটাররা যদি বদল চান, তা হলে ভোটদানের অঙ্কে তা প্রতিফলিত হয়। ৬৮ শতাংশের কথা শুনেই তাই বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘‘রাহুলের এত প্রচার কোথায় গেল? মানুষ তো বদল চেয়ে বাড়ি ছেড়ে বের হল না?’’ কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, ফল বেরোলেই সব কিছু বোঝা যাবে। বিজেপির এত নাচানাচির কিছু নেই। আর ৮৯ কেন্দ্রে গত বছর ঠিক কত ভোট পড়ছিল, তার তুলনামূলক বিচারও তো হয়নি।
বিজেপির অরুণ জেটলি কিংবা কংগ্রেসের আহমেদ পটেল— দু’জনেই জয়ের দাবি করেছেন। পটেল বলেন, ‘‘ইভিএমে কারচুপি না হলে কংগ্রেস জিতবেই।’’ তবে জেটলি বলেন, ‘‘জিতবে না বলেই ইভিএমের কথা গেয়ে রাখল কংগ্রেস।’’ ইভিএম কারচুপির বিতর্কের জেরে গুজরাতে এ বার ভিভিপ্যাট-এর ব্যবহার হয়েছে। আজ সকাল থেকে সুরাতের ৭০টি বুথে ইভিএম বিকল হয়। ভারুচের বিভিন্ন এলাকাতেও ইভিএম নিয়ে সমস্যা হয়। পোরবন্দরে কংগ্রেসের অভিযোগ, ইভিএম জুড়ে গিয়েছে ব্লুটুথের সঙ্গে! তবে দিনের শেষে কমিশন জানায়, কিছু ইভিএমে জটিলতা হওয়ায় তা বদলানো হয়েছে।