ফাইল ছবি।
গুজরাত ভোটকে সামনে রেখে দলের একাংশ চেয়েছিল দ্রুত রাহুল গাঁধীর রাজনৈতিক ওজন বাড়তে। সেই মতো সোমবারই দলের নির্বাচিত সভাপতির ব্যাটন উঠেছে তাঁর হাতে। আর এ বার নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনের জন্য বেছে নিলেন নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতকেই।
স্বাভাবিক ভাবেই এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ইস্যুতে সরব হলেন কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আগে দুর্নীতি নিয়ে অনেক কথা বলতে শোনা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু, যে দিন থেকে জয় শাহ এবং রাফাল চুক্তির দুর্নীতি সামনে এসেছে, তার পর থেকেই দুর্নীতি নিয়ে চুপ করে গিয়েছেন তিনি। এখন আর দুর্নীতি নিয়ে কোনও কথা বলতে শোনা যায় না প্রধানমন্ত্রীকে।’’
গুজরাতের সাধারণ মানুষের জন্য বিজেপি সরকার কিছু করেনি, এমন অভিযোগ তুলে কংগ্রেস সভাপতির দাবি, ‘‘গত ২২ বছরে সাধারণের জন্য কোনও উন্নয়ন কাজ করতে দেখা যায়নি ক্ষমতাশালী বিজেপি সরকারকে। জিনিসের দাম বেড়েছে, কিন্তু কৃষকদের ঋণ মকুব করা হয়নি। সব উন্নয়ন হয়েছে শুধুমাত্র ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদের কথা ভেবে।’’
পাশাপাশি, এ দিন ন্যানো গাড়ি নিয়েও মুখ খোলেন রাহুল। বলেন, ‘‘৩৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ন্যানো কারখানা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, রাস্তায় এই গাড়ি চোখে পড়ে না। আসলে শিল্পপতিদের কথা ভেবে একাধিক পদক্ষেপ করেছে বিজেপি সরকার। এ রাজ্যের জল, বিদ্যুৎ সবই শিল্পপতিদের জন্য।’’
অমদাবাদের জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন রাহুল। সোমবার। পিটিআই।
গুজরাতের প্রথম দফার নির্বাচনে তিনি যে খুশি তাও এ দিন জানিয়েছেন কংগ্রেসের নির্বাচিত সভাপতি। এ বারের নির্বাচনে কংগ্রেস ভাল ফল করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। ক্ষমতায় এলে তাঁর সরকার কৃষকদের স্বার্থে কাজ করবে, তা ফের এক বার বুঝিয়ে দিয়েছেন রাহুল। কথা দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে কৃষি ঋণ মকুবের পাশাপাশি বেতন কাঠামোয় ভারসাম্য আনার ব্যাপারেও। আর এ বিষয়ে বিজেপিকে নিশানা করে রাহুলের অভিযোগ, কোনও প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি তারা। এখন তারা নীতিহীনতায় ভুগছে।
আরও পড়ুন: সি-প্লেনে সবরমতী নদী পথে প্রচারে মোদী
গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে কংগ্রেস-বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে প্রাথমিক প্রস্তুতি এখানেই সেরে ফেলতে চাইছেন মোদী এবং রাহুল ব্রিগেড। কয়েক সপ্তাহ ধরে নিজ রাজ্য গুজরাত জুড়ে একের পর জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, এক বিন্দু জমি যে কংগ্রেস ছাড়তে চায় না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছে তারা। আর তাই দিল্লি ছেড়ে গুজরাতের জমি আঁকড়ে রয়েছেন রাহুলও। এমনকী, নির্বাচিত সভাপতি হওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনের জন্য বেছে নিলেন সেই গুজরাতকেই। আর একটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হলেও প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে মোদীকেই আক্রমণের জন্য বেছে নিলেন সদ্য নিযুক্ত কংগ্রেস সভাপতি।