আমদাবাদের এক ‘স্পর্শকাতর’ এলাকাকে অমিত শাহ বেছে নিলেন ‘মন কি বাত, চায় কে সাথ’ কর্মসূচি পালনের জন্য। ছবি: রয়টার্স।
যুব কংগ্রেস ব্যঙ্গাত্মক টুইট করেছিল প্রধানমন্ত্রীর ‘চা বিক্রেতা’ অতীতকে কটাক্ষ করে। পরে সেই টুইট ডিলিট করা হয়েছে, দুঃখপ্রকাশও করা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু ভোটের মুখে গুজরাতি অস্মিতা জাগিয়ে তোলার এত বড় সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করতে চায় না বিজেপি। হাতিয়ার হয়ে উঠল প্রধানমন্ত্রীর ‘মনের কথা’। গুজরাতের ৫০ হাজার বুথে বিজেপি-র উদ্যোগে আজ ‘মন কি বাত’ শোনানো হল এবং চা খাওয়ানো হল শ্রোতাদের। খোদ অমিত শাহ যোগ দিলেন ‘মন কি বাত, চায় কে সাথ’ কর্মসূচিতে। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বসে রবিবার রেডিওতে সম্প্রচারিত প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনলেন তিনি।
প্রতি মাসের শেষ রবিবার আকাশবাণীতে সম্প্রচারিত হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ ভাষণ ‘মন কি বাত’। মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু হওয়ার পর এটিই মোদীর প্রথম ‘মন কি বাত’, নির্বাচনী মরসুমে এটিই শেষও। তাই প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের ভাষণকে গোটা গুজরাতে কাজে লাগাতে চেয়েছে বিজেপি। গুজরাতি অস্মিতা জাগানোর চেষ্টা হয়েছে। পাশাপাশি অনুচ্চারিত ভঙ্গিতে কট্টরবাদী তথা দাপুটে হিন্দুত্বের হাওয়া তোলার চেষ্টা হয়েছে কংগ্রেসের ‘নরম হিন্দুত্বের’ জবাব দিতে। অমদাবাদের সবচেয়ে স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত যে দরিয়াপুর, সেখানেই এ দিন ‘মন কি বাত, চায় কি সাথ’ কর্মসূচিতে যোগ দেন কট্টর হিন্দুত্বের অন্যতম ‘পোস্টারবয়’ তথা বিজেপি সভাপতি অমিশ শাহ।
আরও পড়ুন: মোদীর ‘বিকৃত’ ছবি পোস্ট করে গ্রেফতার যুবক
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাবরমতী থেকে, রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল পোরবন্দর থেকে এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি জুনাগড় থেকে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: গুজরাতে চাপ বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের
এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ গুজরাতের শাসক শিবিরের পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রচারক। কিন্তু নির্মলা সীতারামন, উমা ভারতী, ধর্মেন্দ্র প্রধান-সহ আরও ডজনখানেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ময়দানে নামিয়ে দিয়েছে বিজেপি। তাঁরা চষে বেড়াচ্ছেন গোটা রাজ্য। উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ-সহ হাফ ডজন মুখ্যমন্ত্রীও প্রচারাভিযানে ঝাঁপিয়েছেন। ৫০ হাজার বুথে একযোগে মোদীর ভাষণ সম্প্রচার এবং চায়ের কাপ হাতে নিয়ে তা শোনার কর্মসূচিতে গুজরাতের বিভিন্ন অংশে এ দিন তাই যোগ দিতে দেখা গিয়েছে অনেক রথী-মহারথীকেই।
‘মনের কথা’য় প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ৩৮তম ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রীর বার্তা— সামাজিক বন্ধনকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে সন্ত্রাস, সবাই মিলে একে প্রতিহত করতে হবে। শুধু ভারত নয়, আজ গোটা পৃথিবী সন্ত্রাসবাদের বিপদটা টের পাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন মন্তব্য করেছেন। ২৬/১১ মুম্বই হামলার হতাহতদের এবং শহিদদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁদের এই আত্মবলিদান দেশ কোনও দিন ভুলতে পারবে না।