এ ভাবেই দলবল নিয়ে ওই মহিলার উপর চড়াও হন বিজেপি বিধায়ক। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
এক মহিলাকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হচ্ছে। চড়-থাপ্পড়ের সঙ্গেই বেধড়ক ভাবে মারা হচ্ছে লাথি। অভিযোগ, যিনি মারধর করছেন তিনি গুজরাতের নরোদার বিজেপি বিধায়ক বলরাম থাবানি। সেই মারধরের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। গোটা ঘটনায় তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য বিজেপি। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমদাবাদের ওই এলাকায় জলের বিপুল সমস্যা। এ বিষয়ে বিধায়ক বলরামকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন নীতু তেজওয়ানি নামের ওই মহিলা। স্থানীয়দের দাবি, তিনি এনসিপি সমর্থক। ওই অভিযোগ জানানোর ঘটনা নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে বচসা বাধে নীতুর। এরপরেই দলবল নিয়ে ওই নীতুর উপর চড়াও হন বলরাম। নিজের দফতরের বাইরে রাস্তায় ফেলে ওই মহিলাকে মারধর করেন তাঁরা। বলরামকে দেখা যায়, রাস্তায় পড়ে যাওয়া নীতুকে লাথি মারছেন।
গোটা ঘটনার একটি ভিডিয়ো মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। দলিত নেতা তথা গুজরাতের বডগামের বিধায়ক জিগনেশ মেবাণীও ভিডিয়ো টুইট করে ঘটনার সমালোচনা করেন। ওই ভিডিয়ো দেখা যাচ্ছে, রাস্তার উপর পড়ে রয়েছেন এক মহিলা। সেই অবস্থায় কয়েকজন তাঁকে মারধর করছেন। নিগ্রহকারীদের মধ্যে বলরাম থাবানিও ছিলেন। তেড়ে এসে ওই মহিলাকে লাথি মারতে দেখা যায় তাঁকে।
আরও পড়ুন: ১৭ মন্ত্রীর এলাকায় হার, কেউ মিডিয়াকে এড়াচ্ছেন, কেউ বলছেন, গোলমাল ছিল ইভিএম-এ
ভিডিয়োটি পোস্ট করে জিগনেশ লেখেন, ‘‘জল সঙ্কট নিয়ে অভিযোগ জানাতে যাওয়া এক মহিলাকে প্রকাশ্যে, নির্দয় ভাবে মারধর করেন বিজেপির মাননীয় বিধায়ক বলরাম থাবানি। গুজরাতের ডিজিপি এবং আমদাবাদ পুলিশের কাছে আমার অনুরোধ, অবিলম্বে ওই বিধায়ককে গ্রেফতার করা হোক। কিছুতেই এমনটা চলতে পারে না।’
আমদাবাদের নরোদার বিধায়ক বলরাম থাবানি। তাঁর এই আচরণের নিন্দা করেছে গুজরাত বিজেপি। দলের মুখপাত্র ভরত পাণ্ডিয়া এ দিন বলেন, ‘‘এটি একটি লজ্জাজনক ঘটনা। আমি ওঁর আচরণের নিন্দা করি। একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন দুর্ব্যবহার কখনওই কাম্য নয়। ফোনে ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি জিতু বাঘানির। ওঁকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।’’
ভিডিয়োটি সামনে আসার পরই ঘটনার কথা স্বীকার করেন বলরাম। ওই নীতু তেজওয়ানির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবেন বলেও জানান। দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ পেয়ে আর দেরি করেননি তিনি। শুধু ক্ষমা চাওয়াই নয়, নীতু তেজওয়ানিকে দিয়ে রাখিও বাঁধান। সংবাদমাধ্যম সূত্রে দু’জনের সেই ছবি সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে সমালোচনার জের, হিন্দি বাধ্যতামূলক নয়, চাপের মুখে জাতীয় খসড়া নীতিতে সংশোধন
থাবানির বিরুদ্ধে দল কোনও পদক্ষেপ না করায়, বিজেপির অন্দরেই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কোনও শাস্তি না দিয়ে শুধুমাত্র ঘটনার নিন্দা করে দায় ঝেড়ে ফেলা হল কেন, গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই এমন প্রশ্ন উঠছে। সবকিছু জেনেও এখনও পুলিশ কেন তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেনি, এমন প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।
বলরাম থাবানির ভাই কিশোর থাবানিও ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন এবং তিনিও ওই মহিলাকে মারধর করেন বলে সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রে সামনে এসেছে। যদিও এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি বিজেপির তরফেও।