Indian-Pakistan Trade

ঘুরপথে পাকিস্তানে ৮৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য যায় ভারত থেকে! ইসলামাবাদ বাণিজ্য বন্ধ করলেও সেই আমদানি চলছেই

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) বলছে, ভারত থেকে প্রতি বছর অন্য দেশের বন্দর হয়ে ঘুরপথে পাকিস্তানে পণ্য পৌঁছোয়। বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও দুবাই, সিঙ্গাপুর, কলম্বোর বন্দর মারফত পাকিস্তানে পণ্য রফতানি করে কিছু ভারতীয় সংস্থা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:০০
Share:
ঘুরপথে পাকিস্তানে রফতানি হচ্ছে ভারতীয় পণ্য।

ঘুরপথে পাকিস্তানে রফতানি হচ্ছে ভারতীয় পণ্য। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

পহেলগাঁওয়ে হামলার পরে অটারী সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। এ দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। তার পরেও এ দেশ থেকে কোটি কোটি টাকার পণ্য পাকিস্তানে রফতানি চলছে। তার জন্য রয়েছে বিকল্প পথ। আর সেই পথ নতুন নয়। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) বলছে, ভারত থেকে প্রতি বছর অন্য দেশের বন্দর হয়ে ঘুরপথে পাকিস্তানে পণ্য পৌঁছোয়। বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও দুবাই, সিঙ্গাপুর, কলম্বোর বন্দর মারফত পাকিস্তানে পণ্য রফতানি করে কিছু ভারতীয় সংস্থা।

Advertisement

জিটিআরআই একটি নোট প্রকাশ করে জানিয়েছে, প্রতি বছর প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকার (১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ভারতীয় পণ্য অন্য দেশের বন্দর ঘুরে পাকিস্তানে রফতানি করা হয়।

কী ভাবে অন্য দেশের পথ ঘুরে পাকিস্তানে পণ্য রফতানি করে ভারতীয় সংস্থাগুলি, তা-ও প্রকাশ করেছে জিটিআরআই। তারা ওই নোটে জানিয়েছে, ভারত থেকে পণ্য প্রথমে দুবাই, কলম্বো বা সিঙ্গাপুরের বন্দরে পাঠানো হয়। সেখানে জাহাজ থেকে পণ্য নামায় স্বাধীন কিছু সংস্থা। তার পরে তা রাখে বন্দরেরই গুদামে। সেখানে ট্রানজ়িটের সময় পণ্য রাখলে কোনও শুল্ক দিতে হয় না। জিটিআরআই ওই নোটে জানিয়েছে, ‘‘গুদামে পণ্যের লেবেল বদলে ফেলা হয়। উদাহরণ, ভারতে তৈরি পণ্যে ‘মেড ইন আরব আমিরশাহি’ লেবেল সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেই সেগুলি পাকিস্তানের মতো দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে ভারতের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যে বিধিনিষেধ রয়েছে।’’

Advertisement

জিটিআরআই-এর একটি সূত্র বলছে, তৃতীয় দেশ ঘুরে পাকিস্তানে পৌঁছোনোর কারণে ভারতীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ধরা যাক, ভারতের কোনও সংস্থা পাকিস্তানে গাড়ির যন্ত্রাংশ রফতানি করছে। তারা দুবাইয়ের বন্দরে এক লক্ষ ডলারের পণ্য পাঠাল। ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা। এ বার সেই পণ্যের উপর ‘মেড ইন আরব আমিরশাহি’ লেবেল বসানো হয়। তার পরে সেই পণ্যই এক লক্ষ ৩০ হাজার ডলারে বিক্রি করা হয় পাকিস্তানের কাছে। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। কারণ, ওই পণ্যের দামে তখন বন্দরের গুদামে রেখে লেবেল বদলানো, নথিপত্র পরিবর্তনের খরচও যোগ করা হয়। জিটিআরআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, এই উপায় ‘বেআইনি’ নয়, তবে ‘ধূসর’ বলেই গণ্য করা হয়। ব্যবসার স্বার্থেই এই পথ অবলম্বন করে বেশ কিছু রফতানি সংস্থা। মনে করা হচ্ছে, পহেলগাঁও কাণ্ডের পরে তাই দুই দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করলেও বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ হবে না।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত পাকিস্তানে রফতানি করেছে ৪৪৬.৭৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। আমদানি করেছে ০.৪২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি টাকা। পাকিস্তানে রফতানি করা পণ্যের মধ্যে ৬০ শতাংশই হল ওষুধ এবং রাসায়নিক দ্রব্য। তা ছাড়াও চিনি, কফি, চা, কিছু সব্জি, মশলা, পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য, সার, দানাশস্য, প্লাস্টিক, রবার, গাড়ির যন্ত্রাংশ রফতানি করেছে ভারত। আর আমদানি করেছে ফল, বাদাম, তৈলবীজ, ওষধি গাছ, জৈব রাসায়নিক দ্রব্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement