আর্থিক বৃদ্ধি কমার আশঙ্কা রয়েছে, মেনে নিলেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনও। ছবি: রয়টার্স।
নোট বাতিলের ফলে চলতি বছরের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। আজ এমনই আশঙ্কার কথা জানাল আর্থিক সমীক্ষা। আগামিকাল বাজেট পেশ করবেন অরুণ জেটলি। তার আগে আজ সংসদে তিনি যে আর্থিক সমীক্ষা পেশ করেছেন তাতে বলা হয়েছে, আগামী অর্থ বছর, অর্থাৎ ১ এপ্রিল থেকে শুরু অর্থ বছরে, অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ থেকে ৭.২৫ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে।
চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.১ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস করেছিল সরকারের পরিসংখ্যান মন্ত্রক। এই পূর্বাভাস করার সময় অবশ্য নোট বাতিলের ধাক্কা হিসেবের মধ্যে ধরা হয়নি। আজ মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন জানিয়ে দিয়েছেন, তিনিও ৭.০ শতাংশ বৃদ্ধির আশা করছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা ০.২৫ শতাংশ থেকে ০.৫ শতাংশ কম হতে পারে। নোট বাতিল নিয়ে কার্যত এই প্রথম মুখ খুললেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তিনিও স্বীকার করেছেন, নোট বাতিলের ফলে লগ্নি, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ ও কর্মসংস্থান কমেছে। কারণ বাজারে নগদের জোগান কমে যাওয়ায় কেনাকাটা কমেছে। চাষআবাদ থেকে কারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে জোগানও কমেছে। আবাসনের দামও কমেছে। বিক্রিও মার খেয়েছে। সব থেকে বেশি মার খেয়েছে অটোমোবাইল ক্ষেত্র। বিশেষ করে বাইক-স্কুটারের বিক্রি।
নোট বাতিলের প্রভাব যাতে দীর্ঘমেয়াদি না হয়, তার জন্য আর্থিক সমীক্ষায় দাওয়াই হিসেবে বলা হয়েছে, দ্রুত বাজারে নোটের জোগান বাড়ানো হোক। যত দ্রুত সম্ভব ব্যাঙ্ক বা এটিএম থেকে টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়া হোক। ডিজিটাল লেনদেনে মানুষকে নিয়ে যেতে কোনও নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়ার বদলে নানারকম উৎসাহ ভাতার সুপারিশ করেছেন সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর বক্তব্য, আরও বেশি সঞ্চয়, মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনের পথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে নোট বাতিল লাভদায়ক হতে পারে। তবে তার জন্য আদৌ নোট বাতিল দরকার ছিল কি না, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি সুব্রহ্মণ্যন।
আরও পড়ুন: এই বাজেট সম্পূর্ণ নতুন সূচনা, সংসদ চলতে দিন: অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর
নিজেদের গরিব দরদী হিসেবে তুলে ধরতে আর্থিক সমীক্ষায় সকলের জন্য ন্যূনতম আয় বা ‘ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’-এর পক্ষেও সওয়াল করা হয়েছে। সুব্রহ্মণ্যনের যুক্তি, এতে জিডিপি-র ৪ থেকে ৫ শতাংশ খরচ হবে। যা এই মুহূর্তে সরকারের সাধ্যের বাইরে। তবে মধ্যবিত্ত বা স্বচ্ছলদের জন্য ভর্তুকি দিতেও ২ থেকে ৩ শতাংশ খরচ হয়। দারিদ্র দূরীকরণের অন্যান্য প্রকল্প বন্ধ করা হলে এই প্রকল্প চালু করা যেতেই পারে। পরীক্ষামূলক ভাবে কিছু এলাকায় এই প্রকল্প চালু করা উচিত বলে মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার যুক্তি।