তুষারপাত চলাকালীন-ই বিয়ে সারেন রজনীশ কুর্মাচলি। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
তুষারপাতের জেরে বিপত্তি।পণ্ড হতে বসেছিল বিয়ের অনুষ্ঠানও। কিন্তু কথা রাখলেন এক সেনাকর্মী। বরফের মধ্যে ৬ কিলোমিটার ট্রেক করে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছলেন তিনি। তা-ও আবার লগ্ন বয়ে যাওয়ার আগেই। উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রুদ্রপ্রয়াগের ত্রিযুগীনারায়ণ গ্রামের বাসিন্দা রজনীশ কুর্মাচলি। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত তিনি। মাক্কুমঠ গ্রামের বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ের ঠিক হয়েছিল তাঁর। শুক্রবার সেখানেই বিয়ের অনুষ্ঠান বসেছিল।
সেই মতো পরিবার-পরিজন মিলিয়ে ৮০ জনের একটি দল গাড়িতে চড়ে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু তুষারপাতের জেরে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়ি এগোয়নি। এমন অবস্থায় বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন কয়েকজন। কিন্তু বরফ জমেছে বলে মাঝরাস্তা থেকে ফিরে যাবেন! ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেননি রজনীশ। বরফ ডিঙিয়ে, পায়ে হেঁটে বিয়ে করতে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরিবারের লোকজন তাঁকে সমর্থন করেন।
বরফের ঠেঙিয়ে যাত্রা বরযাত্রীর।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসে ওআরওপি মানে ‘ওনলি রাহুল, ওনলি প্রিয়ঙ্কা’! ‘এক পদ এক পেনশন’ টেনে খোঁচা অমিতের
আরও পড়ুন: বিদেশে পালাতে পারেন কে ডি সিংহ! তৃণমূল সাংসদের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
কিন্তু অতজনকে নিয়ে তো আর পায়ে হেঁটে যাওয়া যায় না! তাই বরযাত্রীতে সামিল বয়স্ক লোকজন ও দূর সম্পর্কের আত্মীয়রা ফিরে যান। পরিবারের লোকজন ও হাতেগোনা ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সমেত ২৫ জনকে নিয়ে মাক্কুমঠের দিকে রওনা দেন রজনীশ। প্রায় ৬ কিলোমিটার ট্রেক করে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছন তিনি। রীতি মেনে বিয়েও সারেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায়। তবে প্রচণ্ড ঠান্ডায় বর-কনের গায়ে শীতের পোশাক না দেখে প্রশ্নও তুলতে শুরু করেন অনেকে। তবে পাত্রের দাদা আশিস গায়রোলা বলেন, ‘‘প্রশ্ন উঠতেই পারে! তবে আমরা কিন্তু আনন্দ করেছি। গোটা রাস্তা বরফের গোলা বানিয়ে খেলতে খেলতে গিয়েছে আমার ৮ বছরের ছেলে।’’বরফের মধ্যে ট্রেক করে যেতে অসুবিধা হয়নি? তাঁর জবাব, ‘‘২০০২ সালে একবার এভাবেই বরযাত্রী যেতে দেখেছিলাম। সে বারও পাত্র ছিলেন এক সেনাকর্মী। আমার ভাইও সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তাই উৎসাহ পাই। আশাকরি এই বিয়ের কথাও মনে থাকবে মানুষের।’’
গত সাতদিন ধরে তুষারপাত হচ্ছে উত্তরাখণ্ডে। ত্রিযুগীনারায়ণ গ্রামে বিদ্যুৎ নেই কারও বাড়িতে। তাতে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে আসায় ওই পরিবারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রুদ্রপ্রয়াগের জেলাশাসক মঙ্গেশ ঘিলডিয়াল। রাস্তায় বরফ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে লাগাতার তুষারপাতের জেরে পরিস্থিতির উন্নতি হতে সময় লাগবে।