নিলামবাজার গার্লস হোস্টেলে ভিজিল্যান্স কর্তারা হানা দিতেই আজ সরগরম দক্ষিণ করিমগঞ্জের রাজনীতি।
সমষ্টির এআইইউডিএফ বিধায়ক আব্দুল আজিজ খান বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার কাজের সরকার। গার্লস হোস্টেল নিয়ে বিধানসভায় প্রশ্ন উত্থাপন করতেই মুখ্যমন্ত্রী ভিজিল্যান্স পাঠিয়ে তদন্ত করাচ্ছেন।’’
তবে গার্লস হোস্টেলে তদন্তে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ ভিজিল্যান্স বিভাগের কর্তারা যে এ দিনই প্রথম তদন্তে এসেছেন, তা নয়। সিদ্দেক আহমেদ মন্ত্রী থাকাকালীনও তাঁর ছোট ভাইয়ের সংগঠন ‘রঘুরটুক ক্লাব অ্যান্ড লাইব্রেরি’ নির্মিত গার্লস হোস্টেলের তদন্ত করতে এসেছিল ভিজিল্যান্স।
কিন্তু এ দিনের তদন্তে কার্যত আপ্লুত বিধায়ক আব্দুল আজিজ খান। অসমে ইউডিএফ শাসক বিরোধী। বিধায়ক কিন্তু এ দিন বিজেপির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। এতে অনেকেই হতবাক। তাঁদের কারও কারও বক্তব্য— দক্ষিণ করিমগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদের সঙ্গে বর্তমান বিধায়ক আব্দুল আজিজ খানের রাজনৈতিক সংঘাত রয়েছে। রঘুরটুক ক্লাব অ্যান্ড লাইব্রেরির সম্পাদক সিদ্দেকবাবুর ছোট ভাই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রাক্তন বিধায়কের ভাইয়ের সংস্থার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর তদন্ত শুরু কারনোয় প্রচণ্ড খুশি আজিজ। তিনি অভিযোগ করেন, গার্লস হোস্টেলে গত রাত পর্যন্ত কেউ ছিল না। ছিল না কোনও আসবাবপত্র। কিন্তু গভীর রাতে বিছানাপত্র সেখানে রেখে দেওয়া হয়। যাতে ভিজিল্যান্স কর্তারা এসে দেখেন, ছাত্রী আবাসটি ভাল ভাবেই চলছে। তাঁর আরও অভিযোগ, সরকারি টাকা খরচে তৈরি ওই আবাসটি ভোগ করছেন প্রাক্তন বিধায়কের পরিজনরা। বিধায়ক জানান, ১৪৪ ধারা জারি থাকার পরও গত রাতে কী ভাবে সেখানে জিনিসপত্র ঢোকানো হল, তা নিয়ে নিলামবাজার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ ভিজিল্যান্স শাখার দুই আধিকারিক ছাত্রী আবাসটি পরিদর্শন করেন। ডিএসপি পর্যায়ের আধিকারিক টি হোসেন জানান, তাঁরা সরেজমিন তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবেন। সেই অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার।
উল্লেখ্য, নিলামবাজার ছাত্রী নিবাস তৈরির জন্য কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়। বিএডিপি, ডিডিসি তহবিল ছাড়াও, জেলা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। অভিযোগ, ভবনটি যেখানে তৈরির কথা ছিল, সেখানে না গড়ে অন্য জমিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেই জমি ছিল প্রাক্তন বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদের। ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ওই ভবন নির্মাণ হলেও এত দিন ওই জমি সরকার বা রঘুরটুক ক্লাবের নামে দান করেননি প্রাক্তন বিধায়ক। স্থানীয় বাসিন্দারা লাগাতার আন্দোলন করেছিলেন। স্থানীয় সূত্রেই খবর, সম্প্রতি সিদ্দেক জায়গাটি রঘুরটুর ক্লাবকে দান করে দিয়েছেন। ওই নথিতে করিমগঞ্জ জেলা পরিষদের তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুমো থিয়েকের স্বাক্ষর রয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্দেক বলেন, ‘‘অযথা জলঘোলা করা হচ্ছে। ওই জমি ক্লাবের নামে দান করেছি। এখন তদন্তের কোনও অর্থই হয় না।’’