রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছে বেশ কয়েক জন ভারতীয়কে। — ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে এখনও আটকে রয়েছেন অন্তত ২০ জন ভারতীয়। তাঁরা যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার এ কথা জানাল বিদেশ মন্ত্রক। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, আটকে পড়া ভারতীয়দের দ্রুত ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সব রকম চেষ্টা করছে কেন্দ্র। এই নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। সোমবার বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, রুশ সেনাবাহিনীর ‘সহায়ক’ হয়ে কাজ করছিলেন যে সব ভারতীয়, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ভারতের দাবি মেনে এই পদক্ষেপ করেছে রাশিয়া।
২৩ ফেব্রুয়ারি বিদেশ মন্ত্রক প্রথম স্বীকার করে, রাশিয়ার হয়ে কয়েক জন ভারতীয়কে ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। আটকে পড়া সেই ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর বিষয়ে সক্রিয় সরকার। এর পর গত সোমবার বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে আটকে পড়া কয়েক জন ভারতীয়কে মুক্তি দিয়েছে রাশিয়া। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানায়, প্রতিটি বিষয় মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসের নজরে আনা হয়েছে। রুশ প্রশাসনের সঙ্গে এই নিয়ে কথাও হয়েছে। যে সব বিষয় মন্ত্রকের নজরে এসেছে, সেগুলি নিয়ে দিল্লিতে রুশ দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রকের কথায়, ‘‘ফলস্বরূপ বেশ কয়েক জন ভারতীয়কে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রক জানাল, এখনও অন্তত ২০ জন আটকে রয়েছেন রাশি-ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে।
দিন কয়েক আগে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সেখানে জানানো হয়, কয়েক জন ভারতীয়কে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন হায়দরাবাদের মহম্মদ সুফিয়ান। তিনি পরিবারকে একটি ভিডিয়ো বার্তা পাঠান। সেখানে রাশিয়ায় আটকে পড়া ভারতীয়দের ছাড়িয়ে আনার অনুরোধ জানান। সেই বার্তা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, ‘প্রতারণা’ করে তাঁদের রাশিয়ায় যুদ্ধ করতে পাঠিয়েছে ভুয়ো নিয়োগকারী সংস্থা। রুশ বাহিনীর ‘সহায়ক’ হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয় তাঁদের। আরও অভিযোগ, রুশ ভাষায় লেখা নথির ভুল অনুবাদ করা চুক্তিপত্রে সই করে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
সুফিয়ান ছাড়াও রাশিয়ার বাহিনীর হয়ে ইউক্রেনে যাঁদের যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দুই কাশ্মীরি। কাশ্মীরি যুবক আজাদ ইউসুফ কুমারের পরিবারও কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন। ৩১ বছরের যুবককেও রাশিয়ায় চাকরি দেওয়ার নাম করে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছে। একটি ভুয়ো সংস্থা নিয়োগ করেছে তাঁকে। আজাদ পুলওয়ামার বাসিন্দা। টিউবকল খননের কাজ করতেন তিনি। গত ডিসেম্বরে তাঁকে রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।