গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। ছবি- সংগৃহীত।
মেয়েরা দেদার বিয়ার খাচ্ছেন, এটা মোটেই মেনে নিতে পারছেন না গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। তাঁর সহ্যের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে! খুব গোঁসা হয়েছে মনোহরের। আরে আরে করছেনটা কী মহিলারা! কেন তাঁরা বিয়ার খাবেন? বিয়ার পানে যেন শুধুই অধিকার রয়েছে পুরুষের!
গোয়ায় বিধানসভার আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে শনিবার পর্রীকর বলেছেন, ‘‘আমি তো ভয় পেতে শুরু করেছি এটা দেখে যে, মহিলারাও বিয়ার খাচ্ছেন দেদার। এটা আর সহ্য করা যাচ্ছে না।’’
কিন্তু বিয়ার তো নিষিদ্ধ নয় এ দেশে। বহু মানুষ বিয়ার খান। যাঁরা নিয়মিত মদ্যপান করেন না, তাঁদেরও আপত্তি নেই বিয়ারে।
সে খান, তাতে মনোহরের আপত্তি আছে কি না জানা যায়নি। শুধু মহিলারা বিয়ার খেলেই চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে যায় গোয়ার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর।
পর্রীকর বুঝিয়ে দিলেন, বিয়ার যেন শুধু পুরুষেরই অধিকার! বিয়ার-রাজ্যে যেন মহিলাদের ‘প্রবেশ নিষেধ’!
আরও পড়ুন- ঐতিহাসিক! প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্যালেস্তাইনে মোদী
পর্রীকরের ওই মন্তব্যের পরেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় পর্রীকর বিদ্ধ হন মহিলাদের পাল্টা ‘বাণ’-এ। রীতিমতো ‘ট্রোল্ড’ হন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী। শুরু হয়ে তুমুল হাসাহাসি। ব্যঙ্গ, বিদ্রূপও!
মহিলারা কেউ কেউ লেখেন, ‘এসো, আমরা আরও বেশি করে বিয়ার খাই। আরও বেশি করে গলা ফাটিয়ে হাসাহাসি করি।’’ কেউ লেখেন, ‘‘স্যর (গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে), এই তো ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ এসে গেল। অউর অভি তো ভ্যালেন্টাইন্স ডে। কি লীলা বাকি হ্যায় স্যর!’’ এক মহিলা লেখেন, ‘স্যর, আমরা কি তা হলে হুইস্কি খাব?’’
আরও পড়ুন- পুরুষ শিক্ষক বর্জনের গর্জন ঘিরে বিতর্ক
এই ভাবেই পর্রীকরের মন্তব্য নিয়ে দিনভর হাসাহাসি চলে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জোরালো প্রশ্ন ওঠে বিয়ার খাওয়াটা কি শুধু পুরুষেরই অধিকার? এখানেও ব্রাত্য নারী?
সরকারি তথ্য বলছে, ভারতে মদ্যপানে মহিলারা যে একেবারেই অভ্যস্ত নন, তা কিন্তু নয়। প্রাপ্তবয়স্ক ৩৫ শতাংশ পুরুষ মদ খান। সেখানে মদ্যপান করেন মাত্র ৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা।
যদিও ‘ইন্ডিয়ান অ্যালকোহল পলিসি অ্যালায়েন্স’-এর গবেষণা অন্য কথা বলছে। সেই গবেষণার তথ্য, পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, দেশে কত জন প্রাপ্তবয়স্ক মদ্যপান করেন, তার কোনও সঠিক সংখ্যা নেই। তাই সরকারি তথ্যে গলদ থাকার সম্ভাবনা যথেষ্টই।
ওই গবেষণা জানাচ্ছে, মহিলা সহ ভারতে ৫০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মদ্যপান করে থাকেন।