উচ্চ মাধ্যমিকের মতো ফলাফল না হলেও, ম্যাট্রিক বা হাই স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট (এইচএসএলসি) পরীক্ষাতেও প্রথম দশটি স্থান পাওয়া ৩৬ জন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ১৭ জনই ছাত্রী। তবে পাশের হারে ছাত্ররা ছাত্রীদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে। অসম মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ বা সেবা-র মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩,৮৬,৭৮৩ জন। এদের মধ্যে ডিস্টিংশন (৮০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর) পেয়েছে ৪৯৭৬ জন। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫১,০৪৬ জন, দ্বিতীয় বিভাগ পেয়েছে ৯৫,১১১ জন এবং তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছে ৯৪,৪০৬ জন। পাশের হার গত বার ছিল ৬১.৪২%। এবার তা সামান্য বেড়ে ৬২.২০% হয়েছে। এর মধ্যে ছেলেদের পাশের হার ৬৬.৫৪% ও মেয়েদের পাশের হার ৫৮.১৪%। তবে আজ ফল প্রকাশ হলেও সেবার তরফে জানানো হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা মার্কশিট হাতে পাবে সপ্তাহ খানেক পরে। খরচ কমাতে এ বার গেজেট ছাপেনি সেবা। সিডিতে ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
৭৮.১২% পাশের হার নিয়ে শীর্ষে রয়েছে বন্যাবিধ্বস্ত ধেমাজি জেলা। উচ্চমাধ্যমিকেও ধেমাজির ফল ছিল পয়লা নম্বরে। এরপরেই রয়েছে কামরূপ মহানগর (৭৭.২১%)। বড়োভূমির চিরাং জেলায় পাশের হার সবচেয়ে কম, মাত্র ২৯.৮৫%। গোয়ালপাড়া, কার্বি আংলং, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলাতেও পাশের হার ৫০ শতাংশের নীচে।
ম্যাট্রিকে প্রথম স্থান পেয়েছে বরপেটা জেলার পাঠশালার গিলবার্ট ইংলিশ স্কুলের ছাত্র রিপুঞ্জয় কলিতা. তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৮৭ (৯৭.৮৩%)। সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। রিপুঞ্জয় জানায়, প্রথম দশে থাকা নিশ্চিত হলেও প্রথম হওয়ার কথা ভাবতেও পারেনি সে। রিপুঞ্জয়ের বাবা-মা বলেন, যে কোনও জিনিস সম্পর্কে খুঁটিয়ে জানার ইচ্ছাই ছেলেকে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করেছে। কেবল প্রথম স্থানই নয়, অন্যান্য বারের মতোই মেধা তালিকায় সাড়া ফেলেছে বরপেটা। ছ’জন ছাত্রছাত্রী মেধা তালিকার প্রথম দশে রয়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে আছে দরং জেলার শঙ্করদেব জাতীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র মৃদুল শর্মা। তার নম্বর ৫৮৫। তৃতীয় হয়েছে শোণিতপুর জেলার মধ্য জামগুড়ি সরকারি স্কুলের শতাব্দী বোরা। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৮৪।
অন্য দিকে, আজ রাজ্যের হাই মাদ্রাসা পরীক্ষার ফলও প্রকাষিত হয়েছে। মোট ১০,২২৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ডিস্টিংশন পেয়েছে ১৪ জন। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণের সংখ্যা ৭৪৯ জন। দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেছে ৩৩৭০ জন ও তৃতীয় বিভাগ পেয়েছে ৩০০০ জন। পাশের হার ৬৯.৬০%। শিবসাগরে পাশের হার সবচেয়ে বেশি ৯৪.৭৪%। সবচেয়ে কম শোণিতপুরে, ৪৯.৬৪%। অবশ্য উদালগুড়িতে ৫ জন পরীক্ষার্থীর কেউই পাশ করেনি। প্রথম স্থান পেয়েছে ধুবুরির কামানডাঙা হাই মাদ্রাসার ছাত্র খোন্দকর শোয়েব। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৪৫। দ্বিতীয় স্থানে আছে গোয়ালপাড়ার রাখালডুবি হাই মাদ্রাসার ওমর ফারুক, সে পেয়েছে ৫৪২। আর ৫২৯ নম্বর পেয়ে দরং শান্তিপুখুরি হাই মাদ্রাসার আব্দুল আলম আহামেদ ও লখিমপুর দৌলতপুর মাদ্রাসার আকুইলা সামসি তৃতীয় হয়েছে। এ দিকে, মাজুলির ৩৬০ বছরের প্রাচীন গড়মূড় সত্র্রের প্রধান বা সত্রাধিকার প্রবীণ গোস্বামীও ম্যাট্রিক পাশ করলেন।, গড়মূড়ের আগের সত্রাধিকার হরিদেব গোস্বামী ৫৪ বছর বয়সে সত্র থেকে পদত্যাগ গার্হস্থ্য জীবনে ফিরে যান। এখন তিনি গড়মূড়ের ছোট সত্রে বসবাস করছেন। মূল সত্রের ম্যানেজিং কমিটি ৩১ মে, লখিমপুরের সেঙেলিজান হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র প্রবীণকে নতুন সত্রাধিকার পদে অভিষিক্ত করে। ম্যানেজিং কমিটির আশা, নতুন সত্রাধিকার অন্তত স্নাতক পর্যায় অবধি পড়াশোনা করবেন। অন্য পূজারীরা তাঁকে সত্রীয় নিয়মকানুন ও শাস্ত্রের পাঠ দেবেন।