আশ্রমের আশ্রমে ভোগ অর্পণ নিয়ে তিন সেবাদাসের সঙ্গে ঝগড়া হয় মেয়েটির। প্রতীকী ছবি।
মানসিক ভাবে অসুস্থ কিশোরীকে সুস্থ করে তুলতে ঝাড়ফুঁক করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিবার। রেখে এসেছিল এক তান্ত্রিকের আশ্রমে। দিন দুই পর সেই আশ্রমে গিয়ে তাঁরা দেখলেন ১৩ বছরের মেয়েটি গুরুতর জখম। তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়েছে, তন্ত্র সাধনার নামে মুখের ভিতর গুঁজে দেওয়া হয়েছে জ্বলন্ত কাঠের টুকরো। এই ঘটনায় আশ্রমের প্রধান গুরু এবং কয়েকজন সেবাদাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ছত্তীসগঢ়ের মহাসামুন্দ জেলার এক পাতেরাপল্লি গ্রামে। ওই গ্রামেরই এক জয় গুরুদেব মানস আশ্রমে গত শুক্রবার ওই ১৩ বছরের কিশোরীকে নিয়ে গিয়েছিল তার দাদা। ঝাঁড়ফুক করে ওই কিশোরীর মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসা সম্ভব বলে তার পরিবারকে বুঝিয়েছিলেন আশ্রমের প্রধান গুরু। সেই ‘চিকিৎসার’ জন্যই বোনকে আশ্রমে রেখে এসেছিলেন ওই কিশোরীর দাদা। তবে তিনি আশ্রম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই শুরু হয় ওই কিশোরীর উপর অত্যাচার।
পুলিশ জানিয়েছে, আশ্রমে ভোগ অর্পণ নিয়ে তিন সেবাদাসের সঙ্গে ঝগড়া হয় মেয়েটির। তাঁদের কথা না শোনায় ওই কিশোরীকে মারধর করেন তাঁরা। পরে জ্বলন্ত কাঠের টুকরো ভরে দেওয়া হয় মেয়েটির মুখের ভিতরে। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয় ওই কিশোরী। মারাত্মক ভাবে পুড়ে যায় মুখের ভিতরের অংশ। পরে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে এসে ঘটনাটি জানতে পারলে আশ্রমের তরফে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, তাঁরা যেন এই ঘটনাটির কথা কাউকে না বলেন।
পুলিশ ওই কিশোরীর দাদার সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, আশ্রমের তিন সেবাদাস মেয়েটির বিরুদ্ধে ভোগে বিষ মেশানোর অভিযোগ এনে তার উপর অকথ্য অত্যাচার চালান। পরে হুমকি দেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটির কথা পুলিশকে জানায় মেয়েটির পরিবার। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় আশ্রমের প্রধান গুরু-সহ তিন জনকে। তিনজনের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টা, অশালীন আচরণ, অপরাধে মদত দেওয়া এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
ছত্তীসগঢ়ের বাঘবাহরা থানার এসডিওপি অজয় শঙ্কর ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, মেয়েটির আঘাত গুরুতর। তাকে আশ্রম থেকে উদ্ধার করার পর প্রথমে বাঘবাহরারই একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী শহর রায়পুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।