মালগাড়ির তলায় চাপা পড়ার সেই মুহূর্ত।
রাখে হরি তো মারে কে! এই কথাটি যেন লেখা হয়েছিল প্রতীক্ষা নাটেকরের জন্যই।
মুম্বইয়ের কুর্লা রেলস্টেশন। ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মগুলোতে ট্রেন ঢুকছে-বেরোচ্ছে। ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন রেললাইন ধরে ছুটে আসছে একটি মালগাড়ি। আচমকা কানে ইয়ারফোন গুঁজে কথা বলতে বলতে মালগাড়ির সামনে এসে পড়েন এক তরুণী। দিব্যি এগিয়ে চলেন ওই রেললাইন ধরে। সামনে তখন ধেয়ে আসছে মালগাড়ি। কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই তাঁর। ততক্ষণে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন তাঁকে সতর্ক করার জন্য চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন।
প্ল্যাটফর্মে ওঠার চেষ্টা করছেন প্রতীক্ষা।
যখন তিনি ব্যাপারটা বুঝলেন তখন এক্কেবারে ঘাড়ের কাছে চলে এসেছে মালগাড়িটি। সামনে সাক্ষাৎ মৃত্যু। তার পরেও শেষ বারের মতো চেষ্টা করেছিলেন প্রতীক্ষা। দৌড়ে প্ল্যাটফর্মে ওঠার চেষ্টা করেন। তাঁকে বাঁচানোর জন্য এগিয়েও আসেন প্ল্যাটফর্মের উপর দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন। কিন্তু তা সম্ভব হবে না বুঝে ফের প্ল্যাটফর্মের উল্টো দিকে দৌড়তে শুরু করেন প্রতীক্ষা। পলক ফেলতেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা।
প্ল্যাটফর্মে উঠতে না পেরে উল্টো দিকে দৌড়তে শুরু করেন।
চলন্ত মালগাড়ির ধাক্কায় এক্কেবারে রেললাইনে মুখ খুবড়ে পড়ল তরুণী। আর তাঁর উপর দিয়ে চলে গেল ট্রেন। যখন সবাই ধরেই নিয়েছে, আর কোনও আশা নেই, তখনই ট্রেন চলে যাওয়ার পর সবাইকে চমকে দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন প্রতীক্ষা। আঘাতও প্রায় নেইই! বাঁ চোখের পাশে সামান্য আঘাত। সারা শরীরে আঘাত বলতে এইটুকুই।
আর কিছুই করার নেই বুঝে শিউরে ওঠেন প্রতীক্ষা।
গত ১৩ মে সকাল ১১টা নাগাদ মুম্বইয়ের কুর্লা স্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ঘটনা। পুরো ঘটনাটিই ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। বছর উনিশের প্রতীক্ষা মুম্বইয়ের ভন্দুপেরের বাসিন্দা। কুর্লা জিআরপি’র তরফে সিনিয়র পুলিশ ইনস্পেক্টর অশোক ভোরাডে জানিয়েছেন, ওই তরুণীকে অক্ষত অবস্থায় রাজাওয়াড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে মানসিক ভাবে খানিকটা বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছেন প্রতীক্ষা। এখনও মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারনেনি তিনি।