রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল কেনায় আপত্তি নেই, চ্যান্সেলরের দিল্লি সফরের আগে জানালেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত। ছবি: রয়টার্স।
ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে দুষে সে দেশ থেকে তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব। তবে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে যাচ্ছে ভারত। ভারতের এই সিদ্ধান্তে কোনও দোষ দেখছে না আমেরিকার অন্যতম সহযোগী দেশ হিসাবে পরিচিত জার্মানি। ভারতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ফিলিপ অ্যাকারম্যান স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না কি কিনবে না, তা তাদের মাথা ঘামাবার বিষয় নয়। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি ২ দিনের ভারত সফরে আসছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কলজ। এই সফরের আগে জার্মানির তরফে এই ‘মাথা না ঘামানোর’ বার্তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
জার্মান রাষ্ট্রদূত ভারতের কূটনীতি এবং ‘আপাত নিরপেক্ষ’ অবস্থানের প্রশংসা করে বলেন, “বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সমস্যার মীমাংসায় ভারতের ভূমিকা প্রশংসনীয়।” তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, যুদ্ধের যা পরিস্থিতি, তাতে এখনই তাতে ইতি পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন না তাঁরা। এর জন্য নাম না করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেই দায়ী করেছে জার্মানি। কিছু দিন আগেই পুতিন যুদ্ধকে প্রলম্বিত করার জন্য পশ্চিমি বিশ্বের ইন্ধনকে দায়ী করে দাবি করেছিলেন, রাশিয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট মোকাবিলার চেষ্টা করলেও অপর প্রান্ত থেকে সদিচ্ছা দেখা যায়নি।
রাশিয়াকে ভাতে মারার কৌশল নিতেই আমেরিকা সমস্ত সহযোগী দেশকে মস্কোর কাছ থেকে তেল কিনতে নিষেধ করে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনা আগ্রাসন রুখতে ভারত এবং আমেরিকা কৌশলগত বোঝাপড়া আরও বাড়িয়েছে। কিন্তু আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রাহ্য করেই কম দামে রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে নয়াদিল্লি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ প্রায় ৬ গুণ বাড়িয়েছে ভারত। এ বিষয়ে ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ভারতকে দুষলেও বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত জাতীয় স্বার্থকেই গুরুত্ব দেবে। এর আগে আমেরিকাও রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের তেল কেনার মধ্যে ‘আপত্তি’র কিছু দেখেনি। তবে তারা আশাপ্রকাশ করেছিল যে, ভারত এ বিষয়ে আলোচনার টেবিলে বসবে।