দু’-দু’টি স্বর্ণখনির হদিশ মিলল উত্তরপ্রদেশে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
দেশ জুড়ে অর্থনৈতিক ঝিমুনি নিয়ে এক দিকে যখন আলোচনা তুঙ্গে, ঠিক সেই সময়েই যেন কুবেরের ধনের সন্ধান মিলল এই ভারতের বুকে। উত্তরপ্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা সোনভদ্রে সম্প্রতি দু’টি স্বর্ণখনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে সেখানে প্রায় ৩ হাজার টন সোনা মজুত রয়েছে বলে গবেষকদের প্রাথমিক অনুমান। এই মুহূর্তে গোটা দেশে সংরক্ষিত মোট সোনার পরিমাণের চেয়ে যা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। যদিও এই ধরনের কোনও তথ্য তাঁদের কেউ জানায়নি বলে দাবি করেছেন ভারতীয় ভূ-তত্ত্ব সর্বেক্ষণ (জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া)-র ডিরেক্টর জেনারেল এম শ্রীধর। শনিবার কলকাতায় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘‘সোনভদ্রে কত পরিমাণ সোনা রয়েছে, তা জিএসআই মূল্যায়ন করেনি।’’
এম শ্রীধর আরও বলেন, ‘‘কোথাও কোনওরকম সম্পদ বা মূল্যবান ধাতুর হদিশ পেলে রাজ্য শাখাকে জানাই আমরা। ১৯৯৮-’৯৯ এবং ১৯৯৯-২০০০ সালে ওই এলাকায় থোঁড়াখুঁড়ি চালিয়েছি আমরা (জিএসআই নর্দার্ন রিজিয়ন)। উত্তরপ্রদেশের ডিজিএম-কে তার রিপোর্টও দিয়েছিলাম, যাতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা যায়।’’
দীর্ঘ দিন ধরে খোঁড়াখুঁড়ি চালিয়ে জিএসআই সম্প্রতি ওই স্বর্ণখনির হদিশ পেয়েছে বলে শুক্রবার দাবি করেন সোনভদ্রের মাইনিং অফিসার কেকে রাই। তিনি জানান, সোন পাহাড়ি ও হরদি ব্লক এলাকায় দু’টি স্বর্ণখনির হদিশ মিলেছে। সোন পাহাড়ির খনিতে ২,৯৪৩.২৬ টন সোনা রয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের। হরদি ব্লক এলাকার খনিটিতে রয়েছে প্রায় ৬৪৬.১৬ কেজি সোনা। সবমিলিয়ে যার বাজারমূল্য প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা। এ ছাড়াও ওই এলাকায় অন্য মূল্যবান খনিজ পদার্থের হদিশও মিলেছে বলে জানান কেকে রাই।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল প্রদত্ত হিসাব অনুযায়ী, এই মুহূর্তে সারা দেশে ৬২৬ টন সোনা সংরক্ষিত রয়েছে। অর্থাৎ সোনভদ্রের দু’টি খনিতে তার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি সোনা রয়েছে বলে জল্পনা শুরু হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে খুব শীঘ্র সেগুলি নিলাম করা হবে বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন সাংসদ ও শিক্ষাবিদ কৃষ্ণা বসুর জীবনাবসান
আরও পড়ুন: ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে কি? সফরে মোদীর কাছে জানতে চাইবেন ট্রাম্প
ইংরেজ শাসকদের হাত ধরেই সোনভদ্রে প্রথম সোনার খোঁজ শুরু হয়। ১৯৯২-৯৩ নাগাদ ভারত সরকার সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। তার পর গত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে সোনার সন্ধান অব্যাহত ছিল সেখানে। তাতেই জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ওই দুই খনির হদিশ পেয়েছে।
ভারতে সোনার ব্যবহার মূলত গয়নার জন্যই। তার জন্য প্রতি বছর বিদেশ থেকে সোনা আমদানি করা হয়। এই বিপুল পরিমাণ সোনা হাতে পেলে আমদানি বাবদ খরচ কমানো যাবে বলে আশাবাদী শিল্পমহল।