খুশি। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহসানার উঞ্ঝার বাড়িতে যশোদা বেন। —নিজস্ব চিত্র
গোটা দেশ যখন টিভির সামনে, যশোদাবেন মোদী তখন অম্বাজি মাতার মন্দিরে। পুজো দিচ্ছেন। প্রার্থনা করছেন। কামনায়, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তিনশোর বেশি আসন। শুধু অম্বাজি নয়, উঞ্ঝার ওই মন্দিরে মহাকালেশ্বরের লিঙ্গও রয়েছে। প্রার্থনা করছেন তাঁর কাছেও।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁর সঙ্গে যখন কথা হল, ফোনের ও পার থেকে আবেগে ভেসে যাওয়া গলায় বললেন, ‘‘খুশ হুঁ। আজ ম্যায় বহত খুশ হুঁ। আমি তো এটাই প্রার্থনা করে এসেছি।’’ পিছন থেকে তখন ভেসে আসছে, ঘরে চলতে থাকা টিভির শব্দ। পাশ থেকে যশোদাবেনের ভাই অশোক মোদীও জানাতে ভুললেন না, ‘‘গোটা দেশের মতো আমরাও খুশি।’’
ভোর থেকেই উপবাস। একেবারেই নির্জলা। দেশ জুড়ে সকাল ৮টাতে ভোটগণনা শুরু হয়েছে। প্রথম কয়েক ঘণ্টা টিভির দিকে তাকাননি যশোদাবেন। স্নান সেরে সাড়ে ৮টা নাগাদ বেরিয়ে পড়েছিলেন অম্বাজি মাতার মন্দিরের উদ্দেশে। দাদা অশোকের উঞ্ঝার বাড়ি থেকে কিলোমিটারখানেক দূরেই ওই মন্দির। যশোদাবেন বললেন, ‘‘আজ বৃহস্পতিবার। গুরুবার। মানে গুরুর দিন। আমি গুরুর জন্য উপোস আছি। একই সঙ্গে অম্বাজি মাতা এবং মহাকালেশ্বরের জন্যও।’’ একটু থেমে বললেন, ‘‘মোদী সাহেব যাতে ৩০০-রও বেশি আসন নিয়ে ফের সরকারে আসেন, সে জন্য ব্রত করেছি। উপোস ওঁর জন্যও।’’
নির্বাচনী পর্বেই যশোদাবেনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল গুজরাতের মেহসানা জেলার ব্রাহ্মণওয়াড়া গ্রামে। তাঁর বাপেরবাড়িতে। তখনই জানা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রী পুজোআচ্চা আর উপোসের উপরেই থাকেন। জিজ্ঞেস করেছিলাম, নিয়মিত মন্দিরে যান? বলেছিলেন, ‘‘ওটাই তো আছে জীবনে। ভগবানকে মনপ্রাণ দিয়ে ডাকি।" কী বলেন ভগবানকে? এক বাক্যে জানিয়েছিলেন, "সবই ওঁর জন্য।’’
আরও পডু়ন: দেশ জুড়ে ফের গেরুয়া ঝড়! মোদীর শাসনেই ভারত, বিরোধী শিবির অন্ধকারেই
আরও পড়ুন: তৃণমূলের দুর্গ বাংলায় রকেট গতির উত্থান বিজেপির
এ দিনও তার অন্যথা হল না। ভোর থেকে রাখা উপবাস ভাঙবেন সব কেন্দ্রের ফল প্রকাশ্যে আসার পর। সে তো অনেক রাত হয়ে যাবে! অনেকটা বিস্ময়-সহ জবাব এল, ‘‘হ্যাঁ তা তো হবেই। কিন্তু সব ফল না জানা গেলে উপোস ভাঙব কী করে!’’ তার পর একটু হেসে, ‘‘টিভি যদিও বলছে, ৩০০-র অনেক বেশিই পাচ্ছেন উনি।’’
মন্দির থেকে ফিরে এসেছেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। তার পর আর টিভির সামনে থেকে ওঠেননি। মাঝে মাঝেই প্রার্থনায় বসছেন। আবার একটু টিভিতে চোখ। পাশে থাকা অশোক মোদীর কথায়, ‘‘ও যে কী খুশি হয়েছে!’’