ছোটপর্দায় ভরপুর বিনোদনের কারিগর এঁরা। তবে মাঝেমধ্যে টেলিভিশনের দর্শকদের হতাশও করেছেন। যে জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলিতে এঁদের দেখার আশায় বসে থাকতেন দর্শকেরা, সেগুলিকে মাঝপথেই ছেড়ে দিয়েছেন সাবির অহলুওয়ালিয়া, হিনা খান বা গশমীর মহাজানির মতো টেলি তারকা।
হিনাদের আচমকা বিদায়ের ধাক্কায় ধারাবাহিকগুলি হয়তো বন্ধ হয়ে যায়নি, তবে তা নিয়ে বেশ বিতর্ক হয়েছে।
বোকাবাক্স বলে যতই কটাক্ষ করুন না কেন, ‘কুমকুম ভাগ্য’-র মতো ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তার সঙ্গে টক্কর দিতে গিয়ে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। তবে ২০১৪ থেকে ’২১ সাল পর্যন্ত কাজ করার পর হঠাৎই সেই ধারাবাহিক ছেড়ে দেন ৪২ বছরের সাবির অহলুওয়ালিয়া। একই পথের পথিক হয়েছিলেন স্মৃতি ঝা-ও।
অভিষেক প্রেম মেহরা ওরফে সাবিরের বিদায়ে ভেঙে পড়েছিলেন বহু ভক্ত। তাঁদের দাবি, ওই দুই চরিত্রের সঙ্গে সুবিচার হয়নি। যদিও ধারাবাহিকের কাহিনি যে ভাবে এগিয়েছে, তেমনটা হওয়ারই ছিল বলে মনে করেন বলে দাবি সাবিরের।
সাবিরের মতোই ছোটপর্দায় বেশ জনপ্রিয় মুখ গশমীর মহাজানি। ৩৬ বছরের এই অভিনেতা মূলত মরাঠি সিনেমায় অভিনয় করেন। তবে ‘ইমলি’-র মতো ধারাবাহিকের সৌজন্যে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন গশমীর। আদিত্যকুমার ত্রিপাঠীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন বহু দর্শক। তবে বছর দু’য়েক কাজ করার পর জানুয়ারির মাঝামাঝি ‘ইমলি’ থেকে সরে দাঁড়ান গশমীর।
‘ইমলি’ ছেড়ে মাঝপথে কেন বিদায় নিলেন? ঘনিষ্ঠ মহলে গশমীরের দাবি ছিল, প্রতি মাসের ১৫ দিন একই ধারাবাহিকের জন্য বরাদ্দ করতে পারছেন না তিনি। কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, মরাঠি সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের জন্য শ্যুটিং করার পর মাসে ১০ দিন ‘ইমলি’-র জন্য বরাদ্দ করতেন গশমীর। স্বাভাবিক ভাবেই অসুবিধায় পড়েছিলেন ‘ইমলি’-র নির্মাতারা।
‘দিল সে দিল তক’-এর মতো ধারাবাহিক হোক অথবা ‘বিগ বস্’-এর ১৪তম মরসুম— জসমিন ভাসিনের টানেই টেলিভিশনের পর্দায় চোখে রাখতেন অনেকে। ‘নাগিন’-এর চতুর্থ মরসুমেও বেশ মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। হঠাৎ সেই ধারাবাহিক ছেড়ে দেন জসমিন। কেন? কী হল? হাজারো প্রশ্ন উঠেছিল।
বিতর্ক শুরু হতেই সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন ৩১ বছরের জসমিন। দাবি করেছিলেন, ‘‘শুরু থেকেই জানতাম যে এই ধারাবাহিকে বেশি দিন থাকতে পারব না।’’ কেন এ কথা বললেন জসমিন? ‘‘ধারাবাহিক ছেড়ে যাওয়ায় দর্শকেরা যদি হতাশ হন, তবে আমি দুঃখিত। কিন্তু, সব সময় ‘নাগিন’-এর ভূমিকায় থাকাটা অসহ্য হয়ে উঠেছিল।’’
‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ ধারাবাহিকের অনুরাগ বসুকে ভুলে যাননি নিশ্চয়ই? দুই মরসুম ধরে একতা কপূরের এই ধারাবাহিক চলছে। অনুরাগের ভূমিকায় রয়েছেন পার্থ সমথান। ৩১ বছরের অভিনেতা অবশ্য দ্বিতীয় মরসুমে আচমকাই ধারাবাহিক থেকে সরে গিয়েছেন। তা নিয়ে যথেষ্ট শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
ধারাবাহিক থেকে সরে যাওয়ার পর শোনা গিয়েছিল যে পার্থ নাকি কোভিডবিধি ভঙ্গ করেছেন। এটাও রটেছিল যে তাতেই নাকি তাঁর উপরে চটে গিয়েছিলেন ধারাবাহিকের অন্যান্য কলাকুশলী।
এমনকি, সব সময় পার্টিতে গিয়ে তাঁর হইহুল্লোড়ে মেতে থাকাও পছন্দ ছিল না অনেকের। পার্থর দাবি ছিল, ‘কসৌটি... ’-তে তাঁর চরিত্রটি একঘেয়ে হয়ে গিয়েছিল।
‘কসৌটি... ’-তে পার্থর সঙ্গে কাজ করেছিলেন হিনা খান। তবে ‘ইয়ে রিস্তা ক্যায়া কহলাতা হ্যায়’ থেকে আচমকাই সরে গিয়েছিলেন তিনি।
প্রায় আট বছর ধরে যে অক্ষরার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, সেই হিনার সরে যাওয়ার খবর শুনে মুষড়ে পড়েছিলেন হিনার ভক্তেরা। এ নিয়ে নানা জনে নানা কথাও বলতে শুরু করেছিলেন। আসল সত্যিটা কী?
নিন্দকেরা বলেন, ‘ইয়ে রিস্তা... ’-র জন্য অত্যধিক পারিশ্রমিক দাবি করে বসেছিলেন হিনা। সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহারও মধুর ছিল না।
এ নিয়ে দীর্ঘ দিন মুখ বন্ধ রেখেছিলেন খোদ হিনা। পরে তাঁর দাবি ছিল, অক্ষরার ভূমিকা থেকে বিরতি নিতেই ওই ধারাবাহিক থেকে সরে গিয়েছিলেন।