ফাইল চিত্র।
এক দিকে আফগানিস্তানে তালিবানি তাণ্ডব। অন্য দিকে কাশ্মীরে পাকিস্তানের হামলা। সব মিলিয়ে দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে রক্তচাপ বাড়ছে সাউথ ব্লকের।
আজ সকালেও জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ ও রাজৌরিতে হামলা চালিয়েছে পাক সেনা। দেওয়ালির আগে এ নিয়ে দশ দিনের মধ্যে তিন বার এই এলাকায় সংঘর্ষবিরতি ভাঙল পাক সেনা। সরকারি সূত্রের মতে, আফগানিস্তানে ভারতের সক্রিয়তা বাড়া এবং আমেরিকার নয়া দক্ষিণ এশিয়া নীতি ঘোষণা হওয়ার পরে আরও মরিয়া হয়েছে উঠেছে পাক সেনা এবং আইএসআই।
সম্প্রতি পাকিস্তানের উপরে সন্ত্রাস প্রশ্নে চাপ বাড়িয়েছে আমেরিকা। মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে অভিযোগ তুলে নিয়েছিল পাকিস্তান। সইদকে অনির্দিষ্ট কাল গৃহবন্দি রাখা যাবে না বলে সম্প্রতি জানিয়েছিল লাহৌর হাইকোর্ট। কিন্তু এখনও তাকে গৃহবন্দিই রেখেছে পাকিস্তান।
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, অর্থনৈতিক দুর্নীতি মোকাবিলার জন্য তৈরি আন্তর্জাতিক ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) সম্প্রতি হাফিজ সইদ প্রশ্নে পাকিস্তানের উপরে প্রবল চাপ তৈরি করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকাভুক্ত জঙ্গি হাফিজকে মুক্তি দিলে ইসলামাবাদের উপর বিনিয়োগ এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে কড়া নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। ফলে সে দেশের সেনা এবং আইএসআই চাইলেও হাফিজকে মুক্তি দেওয়া যায়নি।
কিন্তু সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে ভারতের পক্ষে জটিল সে কথা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছেন সাউথ ব্লকের কর্তারা। তাঁদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগান নীতিতে পাকিস্তানকে গুরুত্বহীন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দা দফতরের চরেরা ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে, ইসলামাবাদকে বাইরে রেখে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির মোকাবিলা করা কার্যত অসম্ভব। সম্প্রতি টুইটারে পাকিস্তানের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। ফলে আমেরিকা পাকিস্তান প্রশ্নে আগের মতোই দ্বিচারিতার পথে ফিরে যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সাউথ ব্লকের আরও আশঙ্কার কারণ, গত এক বছরে চিনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা এক ধাপে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে পাকিস্তানের। আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে যে সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি তৈরি হয়েছে সেখানে সম্প্রতি খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ইরানি জঙ্গিরও।
সব মিলিয়ে গোটা অঞ্চলের পরিস্থিতি গলার কাঁটা হয়ে উঠছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের।