সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্রমশ খর্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে বারে বারেই। উঠেছে ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগও। এ বার আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ফ্রিডম হাউসের রিপোর্টেও সেই অভিযোগ সামনে এল। যদিও কেন্দ্র কড়া ভাষায় সেই রিপোর্টের প্রতিবাদ করেছে।
গণতন্ত্র রক্ষায় বিশ্বের কোনও দেশের সরকার ও বিচারবিভাগ কতটা সক্রিয়, নির্বাচন প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ, নাগরিক অধিকার কতটা সুরক্ষিত, রাজনৈতিক সংস্কৃতি কেমন, দেশের মানুষ রাজনীতির সঙ্গে কতটা যুক্ত, তা মূল্যায়ন করে ‘ফ্রিডম অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক ‘স্বাধীনতা সূচক’ প্রকাশ করে আমেরিকার সংস্থা ফ্রিডম হাউস। ২০২০ সাল পর্যন্ত তালিকায় ‘স্বাধীন’ দেশ হিসেবেই চিহ্নিত ছিল ভারত। কিন্তু ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে গণতন্ত্রিক অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিরিখে ভারতকে ‘আংশিক স্বাধীন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০১৮ সালে স্বাধীনতা সূচকে ১০০-র মধ্যে ৭৭ পেয়েছিল ভারত। ২০২০ সালে তা নেমে এসেছিল ৭১-এ। এ বার আরও কমে স্বাধীনতা সূচকে ভারতের প্রাপ্ত ‘স্কোর’ ৬৭। শুধু তাই নয়, রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতে সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা বেড়েছে, রাজনৈতিক এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিসর কমেছে, মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিকদের উপর সরকারি চাপ তৈরি করা হচ্ছে। এসেছে দিল্লিতে সিএএ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়েরের প্রসঙ্গও।
বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীনতার অবনমনের এই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফ্রিডম হাউসের রিপোর্ট পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর’। মোদী সরকারের যুক্তি, কেন্দ্রে একটি দলের সরকার থাকলেও দেশের অনেক অঙ্গরাজ্যেই অন্য দল বা জোট সরকার চালাচ্ছে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার সংশ্লিষ্ট রাজ্যের। ফলে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে একটি দল বা সরকারকে দোষারোপ করা অনুচিত।