মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ‘চায়ে পে চর্চা’র পর এ বার নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ, ‘নাও পে চর্চা’। ফ্রান্সের স্যেন নদীতে মোদীর নৌবিহারের সঙ্গী হচ্ছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ।
আগামী কাল ফ্রান্স, জার্মানি এবং কানাডা— ত্রিদেশীয় সফরে রওনা হচ্ছেন মোদী। এখনও এক বছর পূর্ণ হয়নি প্রধানমন্ত্রিত্বের। কিন্তু বিদেশনীতির প্রশ্নে এক দিকে যেমন তাঁর অতিসক্রিয়তা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে আন্তর্জাতিক মহলের, তেমনই বেশ কিছু ‘আউট অব দ্য বক্স’ পদক্ষেপেরও সাক্ষী থেকেছে দশ মাসের কূটনৈতিক ক্যালেন্ডার।
এরই সাম্প্রতিক সংস্করণটি দেখা যাবে মোদীর আসন্ন বিদেশ সফরে। এখনও পর্যন্ত ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নৌবিহার করছেন—এমন দৃষ্টান্ত ইতিহাসে নেই। যেমন নেই চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাবরমতীর তীরে দোলনায় দোলা অথবা হায়দরাবাদ হাউসের মখমল সবুজ ঘাসে চায়ের টেবিলে একান্ত কথোপকথনের নজির। কিন্তু তিনি, নরেন্দ্র মোদী, এই ধরনের চমকের জন্য পরিচিত। বিদেশনীতির প্রচলিত আড়ষ্ট বৈঠকের ধারাটিকে বদলে দিতে চাইছেন তিনি। কেননা, মোদী মনে করছেন, প্রথামাফিক প্রোটোকলশাসিত নৈশভোজে যতটা না আন্তরিক ভাবে কথা হয়, তার থেকে অনেক বেশি কার্যকর হয়ে
ওঠে এই ধরনের ব্যক্তিগত ছোঁয়া মেশানো আলাপ। ফ্রান্স, জার্মানি এবং কানাডা— তিনটি শিল্পোন্নত দেশেই তাঁর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতিকে বিপণন করতে যাচ্ছেন মোদী। আজ এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশসচিব জয়শঙ্কর। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এই ত্রিদেশীয় সফরের একটি সাধারণ যোগসূত্র হল, দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে মজবুত করা। তিনটি রাষ্ট্রই শিল্পোন্নত এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। ভারতের সঙ্গে বৃহত্তর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঐকমত্যও রয়েছে।’’
বিদেশ মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের সমঝোতা নিয়ে বিস্তারিত কথা হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সমঝোতা, পর্যটন, স্মার্ট সিটি প্রকল্পের বিষয়গুলিও গুরুত্ব পেতে চলেছে। ফ্রান্স থেকে জার্মানিতে যাবেন মোদী। সেখানে তিনি গুরুত্ব দেবেন উৎপাদন শিল্পের উপর। বিদেশসচিবের কথায়, হ্যানোভারের শিল্পমেলায় প্রায় ৩ হাজার বাণিজ্যকর্তার সামনে ভারতীয় শিল্প সংস্থার সিইও-রা (অন্তত ১২০ জন) এ দেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে তুলে ধরবেন। লক্ষ্য, ভারতে জার্মানির উৎপাদন কারখানা খোলার পথ প্রশস্ত করা।