রাজস্থান কংগ্রেসের বৈঠকে না গিয়ে পৃথক কর্মসূচিতে সচিন পাইলট। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
আর মাস সাতেক পরেই বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার প্রস্তুতি নিতে সোমবার ‘জরুরি বৈঠকে’ বসল রাজস্থান কংগ্রেস। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ না দিয়ে ‘বিক্ষুদ্ধ’ সচিন পাইলট ব্যস্ত রইলেন জয়পুরের রাজপথে। পূর্বতন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের জমানার দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের দাবিতে আয়োজিত প্রচারসভায়!
রাজস্থানের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি পর্যবেক্ষক সুখজিন্দর সিংহ রণধাওয়ার ডাকা সোমবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিংহ দোতাসরা-সহ দলের অধিকাংশ প্রথম সারির নেতাই হাজির ছিলেন। একমাত্র ব্যতিক্রম সচিন। তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কর্মসূচি কোনও ব্যক্তি বা রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে নয়। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরার জমানার দুর্নীতির বিরুদ্ধে।’’
সচিন অনুগামীদের অভিযোগ, অভিযোগ, পূর্বতন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের জমানায় ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলি আড়াল করার চেষ্টা করছে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের সরকার। বসুন্ধরার দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের দাবিতে গত সপ্তাহে প্রতীকী অনশনও করেন সচিন। পাশাপাশি, পাইলট শিবিরের তরফে মঙ্গলবার দাবি তোলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে গহলৌত-ঘনিষ্ঠ যে ৮২ জন বিধায়ক শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে ছিল কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তখন গহলৌতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি সভাপতি হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী পাইলট, এ রকমই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময়ই গহলৌত অনুগামী ৮২ জন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে সরিয়ে দিয়েছিল গহলৌতকে।
২০২০ সালে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন পাইলট। সে সময় রাজস্থানের তৎকালীন উপ মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনি রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন প্রয়াত রাজেশ পাইলটের পুত্র। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে। চলতি বছরের শেষেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু সেখানে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটার ইঙ্গিত নেই।