পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ সোনি। —ফাইল চিত্র।
আয়-বহির্ভূত সম্পত্তির মামলায় গ্রেফতার হলেন পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ সোনি। তাঁকে গ্রেফতার করেছে আপশাসিত পঞ্জাবের তদন্তকারী সংস্থা ভিজিল্যান্স ব্যুরো (ভিবি)। এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে। আপের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। যদিও পঞ্জাবের আপ নেতৃত্ব গোটা বিষয়টিকে রাজ্যে দুর্নীতি দমন করার লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ হিসাবেই দেখছে।
পঞ্জাবের ভিজিল্যান্স ব্যুরোর তরফে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই পাঁচ বছরে সোনির আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনও সঙ্গতি নেই। অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন, তাতে দেখা গিয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে তাঁর নিজের এবং পরিবারের মোট আয় ছিল ৪.৫২ কোটি টাকা। অথচ ওই একই সময়ে তাঁর ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ ছিল ১২.৪৮ কোটি টাকা। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সোনি ওই পাঁচ বছরে তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রসন্তানের নামেও সম্পত্তি কিনেছিলেন। এই বিষয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই তদন্ত চালাচ্ছিলেন তদন্তকারীরা। এর আগে এই মামলার তদন্তে অমৃতসরে সোনিকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
তদন্তকারী সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, দুর্নীতি দমন আইনে এফআইআর দায়ের হয়েছিল অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতার নামে। তার পরে রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার তাঁকে অমৃতসর আদালতে তোলার কথা। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকার দুর্নীতির সঙ্গে কোনও ‘আপস’ করবে না। আপ নেতারাও কংগ্রেস নেতার গ্রেফতারির নেপথ্যে এই বিষয়টির কথাই বলছেন। উল্লেখ্য যে, পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সোনি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সে সময় পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন চরণজিৎ সিংহ চন্নী। এর আগে চন্নীকেও আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনায় আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন অনেকে। উল্লেখ্য যে, কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে ‘দূরত্ব’ আজকের নয়। গত ২৩ জুন পটনায় বিরোধীদের বৈঠকেও এই দূরত্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। দিল্লির অর্ডিন্যান্স বিতর্কে কংগ্রেসের সমর্থন চেয়ে তদ্বির করা হলেও হাত শিবিরের তরফে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে অরবিন্দ কেজরীওয়ালদের অভিযোগ। পটনা থেকে ১৬টি বিজেপি বিরোধী দল একসঙ্গে চলার বার্তা দিলেও, বৈঠক শেষে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে কেজরীওয়াল কিংবা আপের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। অর্ডিন্যান্স নিয়ে মতপার্থক্যের কারণেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ছেড়েছেন, এমন জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন বৈঠকের মূল উদ্যোক্তা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানান, বিমান ধরার কারণেই তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়েছেন কেজরীওয়াল। আবার কিছু দিন আগেই দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাশ করায় যে, কেন্দ্রের বিজেপি এবং দিল্লির আপ সরকারের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এক হয়ে লড়বেন কংগ্রেস কর্মীরা।