মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী এবং পুত্র একসঙ্গে ফিরে এলেন লালু প্রসাদের আরজেডি-তে। ছবি: পিটিআই।
সিওয়ানের প্রয়াত মাফিয়া ডন তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী এবং পুত্র একসঙ্গে ফিরে এলেন লালু প্রসাদের আরজেডি-তে। রবিবার লালু এবং তাঁর ছেলে তেজস্বী যাদবের উপস্থিতিতে সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী হেনা সাহাব এবং ছেলে ওসামা আরজেডি-তে ফেরার পরে সিওয়ানে দল শক্তিশালী হল বলেই মনে করছেন লালুর দলের নেতারা।
মাস কয়েক আগের লোকসভা নির্বাচনে আরজেডি টিকিট না দেওয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে সিওয়ান কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়েন হেনা। বিপুল ভোটও পান। ওই কেন্দ্রে জয়ী নীতীশ কুমারের জেডি (ইউ)-এর প্রার্থী বিজয়লক্ষ্মী দেবীর কাছে ৯২ হাজার ভোটে হারেন হেনা। ওই কেন্দ্রের আরজেডি প্রার্থী অনেক কম ভোট পেয়ে নেমে যান তিন নম্বরে। সে সময় অনেকেই বলেছিলেন, সিওয়ান কেন্দ্রে সাহাবুদ্দিনের পরিবারের প্রভাব এখনও বিপুল। সেটাকে অগ্রাহ্য করে হেনা বা ওসামাকে টিকিট না দিয়ে কেন্দ্রটিতে জয় হাতছাড়া করেছেন লালু-তেজস্বীরা। এ দিন হেনা-ওসামার আরজেডি-তে যোগ দেওয়ার পরে অনেকেই মনে করছেন, ছেলে ওসামা-কে সিওয়ানের পরবর্তী নেতা হিসেবে তুলে ধরতেই হেনা পুরনো দলে
ফিরে এলেন।
সিওয়ানের ত্রাস হিসেবে পরিচিত ছিলেন মহম্মদ সাহাবুদ্দিন। তারই মধ্যে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত সিওয়ানের সাংসদ পদে থেকে গিয়েছিলেন। খুন, অপহরণ, জমি দখল-সহ অন্তত ৩৬টি অভিযোগে মামলা চলছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি এবং সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জনকে খুন। ভোটে হারের পরে একের পর এক মামলার শুনানিতে চাপে পড়েন এই দাপুটে নেতা। একটি জোড়া খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয় তাঁর। দিল্লির তিহাড় জেলে থাকাকালীনই ২০২১ সালে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয় সাহাবুদ্দিনের। এই নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে বারবার বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েন লালু। কিন্তু সিওয়ানের ঘাঁটি ধরে রাখতে সাহাবুদ্দিনকে কাছছাড়া করেননি কোনও দিন। তবে তাঁর যাবজ্জীবন হওয়ার পরে সাহাবুদ্দিনের পরিবারের থেকে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন আরজেডি নেতৃত্ব। সে কারণেই এ বার লোকসভা ভোটে বিস্তর দরবার করেও টিকিট পাননি হেনা বা তাঁর ছেলে ওসামা। এ বার হেনা পুরনো দলে ফেরায় সেই দূরত্ব ঘুচল বলেই মনে করা হচ্ছে।