গ্যাংটকে বৈঠকে হামরো সিকিম পার্টির প্রধান ভাইচুং এবং কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক রণজিৎ। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলার পড়শি রাজ্য সিকিমে এ বার বিজেপি বিরোধী জোটের তৎপরতা শুরু করল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে মঙ্গলবার গ্যাংটকে হামরো সিকিম পার্টির প্রধান তথা জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাহুল গান্ধীর ‘দূত’, এআইসিসির সম্পাদক রণজিৎ মুখোপাধ্যায়। সিকিম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোপাল ছেত্রী-সহ দু’দলের আরও কয়েক জন নেতা হাজির ছিলেন ওই বৈঠকে।
২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই সিকিমে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। বর্তমানে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিংহ তামাং ওরফে পিএস গোলের দল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা বিজেপির নেতৃত্বাধীন নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-র সদস্য। ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ বিধানসভার একমাত্র বিরোধী বিধায়ক তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিংয়ের দল ‘সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’-ও আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও ‘নেডা’-তেই রয়েছে!
বৈঠক সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে ভাইচুংয়ের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য পেলেই প্রতিবেদনে তা সংযোজন করা হবে।
কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভাইচুং। ছবি: সংগৃহীত।
অন্য দিকে, আগামী নির্বাচনে ভাইচুংয়ের দলের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি রণজিৎ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপির মদতে সিকিমে অবাধে দুর্নীতি চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী গোলে। এমনকি, এই সরকারের আমলে সিকিমের ঐতিহ্যবিরোধী রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘটনাও পর পর ঘটে চলেছে। কংগ্রেস এবং হামরো সিকিম পার্টি, দু’দলের নেতারাই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।’’ তিনি জানান, আগামী দিনে বিষয়টি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের বিষয়ে মঙ্গলবারের বৈঠকে ভাইচুংয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের টিকিটে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে দার্জিলিং কেন্দ্রে লড়ে হেরেছিলেন ভাইচুং। এর পর ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি আসনেও জোড়াফুল চিহ্নে ভোটে দাঁড়িয়ে পরাস্ত হন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ওই বছরের এপ্রিলে নতুন দল হামরো সিকিম পার্টি গড়ার কথা ঘোষণা করেন। ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে সিকিমের ২৩ আসনে লড়ে একটিতেও জিতে পারেনি ভাইচুংয়ের দল। প্রাক্তন জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক গ্যাংটক এবং তুমেন-লিঞ্জি কেন্দ্রে লড়ে দু’টিতেই হেরেছিলেন।
একই ভাবে ২০১৯ সালের ওই নির্বাচনে বিজেপি এবং কংগ্রেসও সিকিমে খাতা খুলতে ব্যর্থ হয়েছিল। অন্য দিকে, ওই ভোটে সে রাজ্যের ৩২টি আসনের মধ্যে গোলের দল ১৭ এবং চামলিংয়ের দল ১৫টি কেন্দ্রে জিতেছিল। অবশ্য পরে চামলিংয়ের দলের ১২ জন বিধায়কই বিজেপিতে যোগ দেন। দু’জন চলে যান শাসকদল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চায়। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চামলিং শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারেন।