ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। —ফাইল চিত্র।
উপাসনাস্থল আইন নিয়ে তাঁর মন্তব্য আদালতে আলোচনার অঙ্গ ছিল বলে দাবি করলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর বক্তব্য, “যতক্ষণ না কোনও বক্তব্য রায়ে স্থান পাচ্ছে ততক্ষণ তা কেবলই পর্যবেক্ষণ।”
১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইন অনুযায়ী, কোনও উপাসনাস্থলের প্রকৃতি পরিবর্তন করা যায় না। ১৯৪৭ সালে সেগুলির যা প্রকৃতি ছিল তা অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। কেবল অযোধ্যা বিতর্ককে এই আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল।
কিন্তু কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ মন্দিরের উপরে তৈরি, এই মর্মে আর্জির ভিত্তিতে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে এই ধরনের সমীক্ষার জেরে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। অজমের শরিফ দরগা শিবমন্দিরের উপরে প্রতিষ্ঠিত, এই বক্তব্য জানিয়ে পেশ করা আর্জি গ্রহণ করেছে রাজস্থানের আদালত। বস্তুত উপাসনাস্থল আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেই মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার শুনানির সময়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের করা মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অজমেরের আর্জি নিম্ন আদালত গ্রহণ করার পরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন চন্দ্রচূড়। আইনজীবীদের একাংশ ও অন্য শিবির থেকে দাবি করা হয়, তাঁর আমলে শীর্ষ আদালত উপাসনাস্থলের প্রকৃতি বদলের চেষ্টা বন্ধ করেনি। আদালতে উপাসনাস্থল আইন নিয়ে শুনানির সময়ে তিনি বলেন, “ওই আইন উপাসনাস্থলের ধর্মীয় প্রকৃতি নির্ধারণের পথে বাধা নয়।” গত কাল নয়া প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, উপাসনাস্থল আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উপাসনাস্থলে সমীক্ষা চালানো যাবে না। এ নিয়ে নতুন মামলাও করা যাবে না।
আজ এক আলোচনাসভায় নিজের মন্তব্যের পক্ষে সওয়াল করে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, “আদালতে হওয়া মন্তব্যকে নির্দিষ্ট প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে বোঝা প্রয়োজন। সত্য জানতে আইনজীবীদের প্রশ্ন করা হয়। কখনও কখনও বিচারপতিরা সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান থেকে আইনজীবীদের প্রশ্ন করেন। সেই মন্তব্যেই কোর্টের চূড়ান্ত অবস্থানের প্রতিফলন ঘটছে এমনটা ধরে নিলে কোর্টে হওয়া কথোপকথনের অমর্যাদা করা হয়।” তাঁর কথায়, “যতক্ষণ না কোনও বক্তব্য রায়ের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ততক্ষণ তা পর্যবেক্ষণ। তা নজিরনয়।”