তথাগত রায়।
আগামিকাল, শুক্রবার মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের। সে জন্য আগরতলা থেকে কলকাতায় চলেও এসেছিলেন তিনি। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে বাদ সাধল কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (পিএমও) অনুরোধে তথাগতবাবুকে সফর স্থগিত রাখতে বলল রাষ্ট্রপতি ভবন। আর তার জেরে তুঙ্গে উঠল জল্পনা।
এ দিন তথাগতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়েরা আমেরিকায় থাকে। তাদের কাছে যাব বলে ঠিক করেছিলাম। তবে পিএমও থেকে বলা হয়, আপাতত যাত্রা স্থগিত করলে ভাল হয়। সেই কারণে এখন যাচ্ছি না।” কেন এমন অনুরোধ? সে ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তথাগতবাবু। কিন্তু কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্তের ফলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে ত্রিপুরার প্রশাসনিক মহলে।
উত্তেজিত রাজনৈতিক নেতারাও। তাঁদের কারও কারও প্রশ্ন, তবে কি ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার? রাজ্য বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই এমন দাবি জানিয়ে আসছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রিপুরায় চলতি বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বিজেপি নেতারা চাইছেন, এ বার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে ভোট হোক দেড় দশকের বাম শাসিত ত্রিপুরায়।
যদিও রাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদের বড় অংশই এমন সম্ভাবনাকে আমল দিচ্ছেন না।। তাঁদের মতে, ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির মতো পরিস্থিতি নেই। সুতরাং এমন কোনও পদক্ষেপ করে নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহরা অহেতুক বিতর্কে জড়াবেন না। বরং, চলতি বছরের শেষে গুজরাতের সঙ্গে ত্রিপুরায় ভোট সেরে ফেলা হতে পারে বলেই তাঁদের মত। নিয়ম অনুযায়ী বিধানসভার মেয়াদ ফুরোতে যদি ছ’মাসের কম সময় বাকি থাকে। তা হলে যে কোনও দিন ভোট করাতে পারে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। একটি সূত্রের খবর, সেই ঘোষণা হতে পারে বলেই রাজ্যপালকে বিদেশ যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রপতির শাসন জারি না-হলে আগাম ভোট ঘোষণার সঙ্গে রাজ্যপালের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনও সম্পর্কই নেই। তাই রাজনীতিকদের অন্য একটি মহলের মত হলো, রোহিঙ্গা সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতেই তথাগতবাবুকে এই মুহূর্তে রাজ্য ছাড়তে বারণ করল কেন্দ্র।
রাজ্যপালের সফর স্থগিত করা নিয়ে ত্রিপুরা সরকারও কিছু জানে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী বাদল চৌধুরী। ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।