S jaishankar

‘ক্ষমতায় এসে বাবাকে সচিব পদ থেকে সরান ইন্দিরা’, তার পরই ঘুরে যায় জয়শঙ্করের জীবন

২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশের বিদেশ সচিব ছিলেন জয়শঙ্কর। তার আগে গুরুত্বপূর্ণ দেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। যদিও তাঁর বাবা কে সুব্রহ্মণ্যম ছেলের এই সাফল্য দেখে যেতে পারেননি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:২২
Share:

২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশের বিদেশ সচিব ছিলেন জয়শঙ্কর। এখন দেশের বিদেশমন্ত্রী। — ফাইল ছবি।

বরাবর নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছেন। কারণ, বরাবর তাঁর লক্ষ্য ছিল দেশের বিদেশ সচিব হবেন। এই লক্ষ্যের নেপথ্যে রয়েছে এক ‘স্বপ্নভঙ্গ’। তাঁর বাবার ‘স্বপ্নভঙ্গ’। একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এই কথাই জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বাবার জন্যই তাঁদের ভাইদের উপর একটা অলিখিত চাপ ছিল, সচিব হতেই হবে। বাবা দেখতে পারেননি। তবে বাবার সেই আশা পূরণ করেছেন। সেখানেই থেমে থাকেননি। দেশের বিদেশ সচিব থেকে বিদেশ মন্ত্রীও হয়েছেন।

Advertisement

২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশের বিদেশ সচিব ছিলেন জয়শঙ্কর। তার আগে চিন, আমেরিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। যদিও তাঁর বাবা কে সুব্রহ্মণ্যম ছেলের এই সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। ২০১১ সালে মৃত্যু হয়েছিল দেশের অন্যতম সেরা জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলীর। কেন তিনি চাইতেন, ছেলেরা দেশের সচিব হবেন? সেই কারণ নিজেই জানিয়েছেন জয়শঙ্কর।

জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘আমি সেরা ফরেন সার্ভিস অফিসার হতে চাইতাম। আমার ধারণা ছিল, একমাত্র বিদেশ সচিব হলেই সেরা অফিসার হওয়া যায়। আমার বাড়িতেও এ রকমই একটা ধারণা চালু ছিল। একে চাপ বলব না। কিন্তু আমরা সকলেই এই বিষয়টি নিয়ে একটু বেশিই সচেতন ছিলাম।’’ কেন এ রকম হয়েছিল, সে কথাও জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবাও আমলা ছিলেন। সচিব হয়েছিলেন। কিন্তু সচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে জনতা সরকারের আমলে সচিব হয়েছিলেন। সম্ভবত সে সময় কনিষ্ঠতম সচিব ছিলেন।’’

Advertisement

১৯৮০ সালে প্রতিরক্ষা উৎপাদন দফতরের সচিব ছিলেন সুব্রহ্মণ্যম। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘১৯৮০ সালে ইন্দিরা গান্ধী পুনর্নির্বাচিত হন। আমার বাবাই প্রথম সচিব ছিলেন, যাঁকে তিনি অপসারিত করেন। সকলেই বলবেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে তিনিই সব থেকে বেশি জ্ঞানী মানুষ ছিলেন।’’ কেন তাঁর বাবাই কোপে পড়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর? জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সম্ভবত আমার বাবা দৃঢ়, ন্যায়পরায়ণ ছিলেন। সে কারণেই হয়তো সমস্যা হয়েছিল। আমি জানি না।’’

পরে রাজীব গান্ধী যখন ক্ষমতায় আসেন, তখনও পদোন্নতি হয়নি সু্ব্রহ্মণ্যমের। জয়শঙ্করের দাবি, তাঁর বাবার থেকে পদে, অভিজ্ঞতায় নবীনরা মন্ত্রিসভার সচিব হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যদিও এই নিয়ে কখনও কথা বলেননি। তবে তাঁর দাদা যখন সচিব হয়েছিলেন, তখন দারুণ খুশি হয়েছিলেন। সেই থেকেই জয়শঙ্করের কাছে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, আসলে তাঁর বাবা কী চান। তাঁর কথায়, ‘‘বাবার প্রয়াণের পর আমি সচিব হয়েছি। তখন আমাদের লক্ষ্য ছিল একটাই, সচিব হওয়া। সেই লক্ষ্য আমি পূরণ করেছি। তবে যে রাজনৈতিক সুযোগ আমার সামনে এসেছি, তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।’’

২০১৯ সালে জয়শঙ্করকে ফোনটি করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, তাঁকে মন্ত্রিসভার অংশ হতে হবে। এ রকম যে হতে পারে, এক বারের জন্যেও ভাবেননি জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘এই কথাটা মাথাতেই আসেনি। আমার পরিসরে আর কারও মাথাতে এসেছিল বলেও মনে হয় না।’’ তবে সেই দায়িত্ব কতটা পালন করতে পারবেন, সেই নিয়েও প্রথমে ছিল অনিশ্চয়তা। পরে যদিও ছবিটা পাল্টে যায়। জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘অনেক সময় না জেনেই এর মধ্যে ঢুকে পড়েছি। তার পর অন্যদের দেখে শিখেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement