অসুস্থ বৃদ্ধকে ঠেলাগাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর পরিজন। ফাইল ছবি
অসুস্থ বৃদ্ধকে ঠেলাগাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর পরিজন। অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ফোন করেও মেলেনি সুরাহা। মধ্যপ্রদেশের দাবো শহরের কাছে লাহার অঞ্চলের সেই ঘটনার ভিডিয়ো-সহ প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশে স্থানীয় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিদ্বেষ ছড়ানো-সহ বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করেছেন দাবো কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চিকিৎসক রাজীব কৌরব। এফআইআর-এ বলা হয়েছে, ওই তিন সাংবাদিকের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন। যদিও সংশ্লিষ্ট পরিবারটির দাবি, খবরে প্রকাশিত ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য।
প্রশাসনের দুরবস্থা তুলে ধরায় এর আগেও একাধিক বার প্রশাসনের রোষের মুখে পড়েছেন সাংবাদিকেরা। উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলের মিড-ডে মিলে নুন-রুটি খাওয়ানোর খবর করায় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককেই গ্রেফতার করা হয়। আবার ওই রাজ্যেরই হাথরসে নির্যাতিতার খবর করতে গিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জেলে যান সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান। তিনি এখনও জেলবন্দি। শুধু যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যেই নয়, শিবরাজ সিংহ চৌহানের মধ্যপ্রদেশেও বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের খবর প্রকাশের জন্য সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় কিছু দিন আগেই। সেখানে পুলিশ তাঁদের জামা খুলিয়ে অন্তর্বাস পরা অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রাখে। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পরে মুক্তি পান ওই সাংবাদিকেরা। সেই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল শিবরাজ প্রশাসন।
রোগীকে ঠেলাগাড়িতে চাপানোর ঘটনা প্রসঙ্গে ভিন্দের জেলাশাসক সতীশ কুমার এস জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে কুঞ্জবিহারী কৌরব, অনিল শর্মা এবং এন কে ভাটেলে নামের তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও অর্থ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত একটি দল এই ঘটনার তদন্ত করেছে। জেলাশাসকের দাবি, ওই পরিবারটি মোটেও অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দেয়নি। এ-ও জানিয়েছেন, জ্ঞানপ্রকাশ বিশ্বকর্মা নামে ওই বৃদ্ধকে আসলে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই পরিবারটি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে বলেও তাঁর দাবি।
যদিও অসুস্থ জ্ঞানপ্রকাশের ছেলে হরিকৃষ্ণ এবং মেয়ে পুষ্পা জানিয়েছেন, তাঁরা অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ফোন করেছিলেন। কিন্তু সাড়া না পেয়েই বাধ্য হয়ে বাবাকে ঠেলাগাড়িতে চাপিয়ে পাঁচ কিলোমিটার নিয়ে গিয়েছেন। সরকারি প্রকল্প প্রাপ্তি নিয়ে জেলাশাসকের দাবিও খারিজ করে দিয়েছে ওই পরিবার। পুষ্পার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার একটি কিস্তির টাকা পেয়েছিলাম।’’ হরিকৃষ্ণ জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে সরকারি আধিকারিকরা তাঁদের কুঁড়ে ঘর দেখে গিয়েছেন। খালি কাগজে তাঁদের স্বাক্ষর করানো হয় বলেও অভিযোগ ওই বৃদ্ধের ছেলের। হরিকৃষ্ণর এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশ্য প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। রাজ্য প্রশাসন সম্প্রতি দাবি করেছে আগের চেয়ে অ্যাম্বুল্যান্স অনেক বেড়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার সুফল মিলছে কি?