ধস এবং হড়পা বানে বিধ্বস্ত মেঘালয়ের একাংশ। ছবি: পিটিআই।
প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মেঘালয়। দফায় দফায় হড়পা বানে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। ধস নেমেছে গারো পাহাড়ের পশ্চিম অংশে। মেঘালয়ের একাধিক গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। চলছে উদ্ধারকাজ।
গারো পাহাড়ের কোলে ছোট্ট গ্রাম ডালু। শুক্রবার সকালে সেখানে আচমকা ধস নামে। তছনছ হয়ে যায় গ্রামের একাংশ। ধ্বংসাবশেষের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় কয়েক জনের। তার পর থেকে শনিবার পর্যন্ত গারো পাহাড়ের পশ্চিম এবং দক্ষিণ অংশে একাধিক বার ধস নেমেছে। হড়পা বানও হয়েছে দফায় দফায়। ১০ জনের মৃত্যু ছাড়াও বহু মানুষ আহত হয়েছেন এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে। মেঘালয়ের একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে কাঠের তৈরি একাধিক সেতু। রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত। শুক্রবারের হড়পা বানের পর বাঘমারি শহর থেকে ডালু গ্রাম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অংশের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সড়কপথে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছতেই পারছেন না উদ্ধারকারীরা। মেঘালয়ের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কয়েকটি দল এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। গারো পাহাড়ের পশ্চিমে ঋষিপাড়া, হাওয়াখানা, সুইপার কলোনি, কামিপাড়া, সানি হিল্সের মতো এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে।
শনিবার সকালে মেঘালয়ের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জেলাগুলিকে বলা হয়েছে ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে সরকারের দফতরে প্রয়োজনীয় সাহায্যের আবেদন করতে। বন্যাকবলিত এলাকায় যাতে নির্বিঘ্নে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়, সে দিকটি নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। ডালু-বাঘমারি এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বিকল্প পথের সন্ধান করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। প্রয়োজনে অস্থায়ী পথ তৈরি করে নিতে হবে, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে মেঘালয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতির কারণে শুক্রবার পশ্চিম গারো পাহাড় অঞ্চলে তিন জন এবং দক্ষিণ গারোতে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়। ধস এবং হড়পা বানের কারণেই এই বিপর্যয়। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড।
মেঘালয়ে বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পড়শি অসমের মনকাচর এলাকায়। সেখানে একাধিক গ্রাম ইতিমধ্যে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেই পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখা হয়েছে।