—প্রতীকী ছবি।
শুধুমাত্র নাবালক হওয়ার জন্যই নির্ভয়াকে ধর্ষণ করে খুনের মামলায় এক অপরাধীর ফাঁসির সাজা হয়নি। মাত্র তিন বছর জেল খেটে রেহাই পেয়ে গিয়েছিল সে। হইচই হয়েছিল তুমুল। কিন্তু আইনে বাঁধা ছিল আদালতের হাত। সেই আইন সংশোধন হয়েছে। আর তার জেরেই এ বার ধর্ষণে অভিযুক্ত এক নাবালককে সাবালক হিসেবে গণ্য করেই বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লির জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। দেশে এই প্রথম।
নয়াদিল্লিতে দিনকয়েক আগে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ আনে ১৭ বছরের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে স্কুটারে তুলে অভিযুক্ত নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। জোর করে মদ খাওয়ায়। নিজেও মদ খায়। তার পর মদ্যপ অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করে। এমনকী পুরো ঘটনাটি ভিডিও করে রেখে তাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে ওই নাবালক অভিযুক্ত। ভয়ে বেশ কিছু দিন মুখ বুজে সব মেনে নেয় ওই ছাত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সহ্য করতে না পেরে গোটা ঘটনাটা জানায় অভিভাবকদের। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলে গ্রেফতার করা হয় ওই কিশোরকে।
এই নাবালকেরই এ বার বিচার হবে তাকে সাবালক ধরে নিয়ে। আর সেই জন্যই দিল্লির নগর দায়রা আদালতে মামলাটি স্থানান্তর করে দিল জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড।
আসামী পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন, এই ঘটনার ক্ষেত্রে কোনওভাবেই নির্ভয়ার ছায়া বা সে রকম নৃশংসতা নেই। তা সত্ত্বেও অভিযুক্তকে সাবালক হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে কেন সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিন্তু সেই যুক্তি নস্যাৎ করে দিয়েছে বোর্ড।
আরও পড়ুন: সংঘাতে অনড় থেকেও ছাড় আদালতকে
২০১২ সালে নির্ভয়া কাণ্ডে দোষী নাবালকের মাত্র তিন বছরের জেল হয়েছিল। ওই রকম নৃশংস অপরাধে এত কম সাজা কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। দেশ জুড়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরই অপরাধ বিচার করে জুভেনাইল আইনে বদল আনার প্রস্তাব আনা হয়। ২০১৫ সালে সেই বিল পাশ হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই সংশোধিত আইন কার্যকর হয়েছে দেশে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে প্রয়োজনে ১৬ বছর বা তার ঊর্ধ্বে থাকা নাবালকদের সাবালক হিসাবেই ধরা হবে।
এর আগে গত জুন মাসেই নয়া দিল্লিতে মারসিডিজ নিয়ে এক পথচারীকে পিষে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত এক নাবালককে একই ভাবে সাবালক হিসাবে গণ্য করা হয়েছিল। জুভেনাইল বোর্ড সেই মামলাটিও নগর দায়রা আদালতে স্থানান্তর করেছিল। তবে বিল পাশ হওয়ার পর ধর্ষণের ঘটনায় এমন নজির এই প্রথম।