ইদ মুবারক! খুলল পাকিস্তানের আকাশ

উত্তর এল, ‘‘উড়ানটাকে নজরে রাখছিলাম। ওটা নিরাপদেই অবতরণ করেছে। আপনাদের কথা দিয়েছিলাম। ইদ মুবারক।’’ কেটে গেল ফোনটা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০২:৫৫
Share:

রাত তখন অনেক। দুবাই থেকে আসা ইন্ডিগোর উড়ানটি দিল্লির ইন্দিরা গাধীঁ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাটি ছোঁয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ফ্লাইট অপারেশন সেন্টারের ফোনটা বেজে উঠল। পাকিস্তানের নম্বর। ফোন তুলতেই ও-পারে পাকিস্তানের অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের অধিকর্তার গলা! অপার বিস্ময়ে ইন্ডিগোর ডিউটি অফিসার বলে ফেললেন, ‘‘স্যার আপনি এখনও জেগে?’’

Advertisement

উত্তর এল, ‘‘উড়ানটাকে নজরে রাখছিলাম। ওটা নিরাপদেই অবতরণ করেছে। আপনাদের কথা দিয়েছিলাম। ইদ মুবারক।’’ কেটে গেল ফোনটা।

দীর্ঘ তিন মাস পর পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতীয় বিমানের প্রবেশের সাক্ষী হয়ে থাকল এই কথোপকথন। বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের পরের দিন (২৭ ফেব্রুয়ারি) থেকেই পাক আকাশসীমা থেকে ভারতে ঢোকার ১১টি এন্ট্রি পয়েন্ট বন্ধ করে দেয় সেনাবাহিনী। তাদের আকাশপথ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পাকিস্তানও। তার পরে এই প্রথম কোনও ভারতীয় যাত্রিবাহী বিমান পাক আকাশসীমা পেরিয়ে দেশে ঢুকল। সোমবার মধ্যরাতে দুবাই থেকে আসা ইন্ডিগোর এ-৩২০ এয়ায়বাসটি ১৮০ জন যাত্রী নিয়ে ভারত-পাক সীমান্তের টেলেম পয়েন্ট দিয়ে দিল্লি পৌঁছয়।

Advertisement

আমদাবাদের কাছে এই টেলেম পয়েন্ট। বালাকোট কাণ্ডের পর এত দিন টেলেম-সহ ১১টি এন্ট্রি পয়েন্টই বন্ধ ছিল। ফলে বিমানগুলিকে অনেকটা ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছিল। তাতে সময় লাগছিল বেশি। আর জ্বালানির খরচও বেড়েছিল অনেকটা। নরেন্দ্র মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতার আসার পর বিষয়টি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে কথা হয়। শনিবার থেকে টেলেম পয়েন্ট খুলে দেওয়া হবে বলে জানায় সেনাবাহিনী। রবিবারই প্রথম দুবাই থেকে এতিহাদের একটি বিমান দিল্লি পৌঁছয়। তবে এতিহাদ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উড়ান সংস্থা। স্থির হয় ভারতের প্রথম যাত্রিবাহী উড়ান হিসেবে ইন্ডিগোর এ-৩২০ বিমানটি টেলেম পয়েন্ট পার করবে। সোমবার ভারতীয় সময় রাত ৮টা ৪২ মিনিটে সেটি দুবাই ছাড়ে। রাত সাড়ে ন’টা থেকে ১০টা ৪০ পর্যন্ত প্রায় ৭০ মিনিট বিমানটি পাকিস্তানের উপর দিয়ে উড়ে টেলেম পয়েন্টে পৌঁছয়। মধ্যরাতে ১২.১০ নাগাদ দিল্লি পৌঁছয় সেটি। তবে ইন্ডিগোর দাবি, পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্যেও তারা তৈরি ছিল। সেইমতো জ্বালানিও ভরা হয়েছিল বিমানে। দুবাই থেকে টেলেম এন্ট্রি পয়েন্ট দিয়ে ভারতে ঢোকার জন্য বড়জোর ১১০০ থেকে ১২০০ কিলোগ্রাম ওজনের জ্বালানি লাগে। সেখানে তাঁরা বিমানে ভরেছিলেন ১৪ হাজার ৬০০ কিলোগ্রাম ওজনের জ্বালানি। মঙ্গলবার টেলেম পয়েন্ট দিয়ে আরও ন’টি বিমান ভারতে ঢুকেছে। ইন্ডিগোর এক বিমানচালক জানান, এতে প্রতি উড়ানের যাত্রাপথে ২২ মিনিট করে সময় কমেছে। অনেকটা জ্বালানিও বেঁচেছে। ভারতের বিমান মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ইদের পর ধাপে ধাপে বাকি ১০টি এন্ট্রি পয়েন্টও খুলে দেওয়া হবে। সবচেয়ে উপকার হবে অমৃতসর-লাহৌরের দিকটা খুললে। পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে ভারতের বিমান চলাচলের সবচেয়ে কম সময়ের রাস্তাটা খুলে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement