নীলগিরির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়তের সঙ্গে ছিলেন বিগ্রেডিয়ার লখবিন্দর সিংহ লিড্ডার। তাঁর মেয়ে আশনার নাম এখন আলোচনায় উঠে এসেছে।
বাবার শেষকৃত্যের দিন পঞ্চদশী তরুণী আশনার নাম প্রকাশ্যে আসার পর মাঠে নেমে পড়ে বিজেপি-র আইটি সেল। আশনার করা পুরনো একটি টুইটকে কেন্দ্র করে তাকে আক্রমণ করা শুরু করেছিল গেরুয়া শিবির।
দেশভক্তি কাকে বলে আশনা শিখেছিলেন তার বাবার কাছ থেকে। আশনা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছে, ‘‘আমাদের কাছে দেশই আগে। সেনার থেকে শেখা, হাত মেলানোর আগে স্যালুট করতে হয়। হ্যালো বলার আগে জয় হিন্দ বলতে হয়।’’
তাকে ট্রোল করার বিরুদ্ধে সরব হন একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কংগ্রেসের কীর্তি চিদম্বরম, শিবসেনার প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী তার পাশে দাঁড়ান।
তাদের বাড়িটাও যেন বাহিনীর শিক্ষায় শিক্ষিত। ষখন কপ্টার দুর্ঘটনার খবর আসে, আশনার ঠাকুমা তাকে মন দিয়ে অনলাইন ক্লাস করতে বলেছিলেন।
আশনার লেখা বই, ‘ইন সার্চ অব টাইটেল: মিউসিং অব আ টিনএজার’-এর মুখবন্ধ লেখেন জেনারেল বিপিন রাওয়ত। এই বইটির প্রকাশক প্রথমে আড়াইশো কপি ছাপিয়েছেন। দুর্ঘটনার পর আশনার নাম নিয়ে চর্চা শুরু হতেই বইয়ের চাহিদা বাড়তে থাকে। প্রকাশক আরও কপি ছাপাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
আশনার এক বন্ধু কবীর চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘‘বন্ধুর প্রয়োজনে সব সময় পাশে থাকে ও। মুখ হাসি লেগে রয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতেও। আমি ওর বন্ধু হতে পেরে সত্যিই গর্বিত।’’
কবীর আরও জানিয়েছেন, ‘‘একটি ঘরে যদি তাকে ১০০ অচেনা মানুষের সঙ্গে আশনাকে রেখে দেওয়া হয়, আমি জানি ও ভয় পাবে না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যাবে। ওর বাবা যখন চিতায় তখন ওর সাহসী মুখটা দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি।’’
বিগ্রেডিয়ার লিড্ডার তাঁর আদরের মেয়েকে ডাকতেন ‘টনি’ বলে। মেয়ের ১৫টি জন্মদিনের মধ্যে মাত্র আটটি জন্মদিনে থাকতে পেরেছেন তিনি।
শেষকৃত্যের পর এক সাক্ষাৎকারে আশনা বলে, ‘‘সুখের স্মৃতিগুলি নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। এটা জাতীয় ক্ষতি। বাবা আমার শুধু হিরো ছিল না, ভাল বন্ধুও।’’