Jammu and Kashmir Terror Attack

‘ক্লাসে কখনও সেকেন্ড হয়নি’, ছেলের শেষকৃত্যের পর অঝোরে কান্না নৌসেনা লেফটেন্যান্টের বাবার, বলছেন, ‘বিচার পাবই’

হরিয়ানার করনালের বাসিন্দা নিহত নৌসেনা লেফটেন্যান্ট বিনয়। তাঁর দেহের পাশে বসে স্ত্রী হিমাংশীর একটি ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বুধবার বিনয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৬
Share:
Father of Navy officer Vinay Narwal says he trust Union Government

(বাঁ দিকে) নৌসেনা লেফটেন্যান্ট বিনয়ের দেহের পাশে স্ত্রী হিমাংশী। ছবি: সমাজমাধ্যম। বিনয়ের শেষকৃত্যে তাঁর বাবা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

দিন সাতেক আগে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন। মধুচন্দ্রিমা থেকে যে সেই ছেলের লাশ ফিরে আসবে, কল্পনাও করতে পারেননি নৌসেনার লেফটেন্যান্ট বিনয় নরওয়ালের বাবা। ছেলের শেষকৃত্য নিজের হাতে সম্পন্ন করেছেন। কান্না থামছে না তাঁর। বার বার বিলাপ করছেন। ছেলের ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করছেন। আর ভরসা রাখছেন ভারত সরকারের উপর। বলছেন, ‘বিচার পাবই’।

Advertisement

হরিয়ানার করনালের বাসিন্দা নিহত নৌসেনা লেফটেন্যান্ট ২৬ বছরের বিনয়। তাঁর স্ত্রী হিমাংশী গুরুগ্রামের মেয়ে। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বিনয়। মৃত্যুর পর তাঁর দেহের পাশে ঠায় বসেছিলেন হিমাংশী। সেই ছবি সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে, যা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। বুধবার করনালে বিনয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। নৌসেনার তরফে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় ‘গান স্যালুট’-এর মাধ্যমে তাঁকে বিদায় জানানো হয়েছে। বিনয়ের বাবা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘‘আমার ছেলে খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। ক্লাসে কখনও সেকেন্ড হত না। প্রতি বারই প্রথম হত। ও ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট হতে চাইত। কিন্তু উচ্চতার কারণে ওখানে সুযোগ পায়নি। তাই নৌসেনায় যোগ দেয়।’’

সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছে বিনয়ের পরিবার। তাঁর বাবার কথায়, ‘‘সরকারের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আশা করি, সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। সরকার তাদের কাজ করছে। আমরা বিচার পাবই। বিনয় খুব ভাল ছেলে ছিল। বীর সৈনিকের মতো প্রাণ দিয়েছে। গোটা দেশ আমাদের সঙ্গে আছে। এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার জন্য ঈশ্বর আমাকে, আমার পরিবারকে শক্তি দেবেন।’’

Advertisement

সদ্যবিধবা হিমাংশীর কথা বলতে গিয়েও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বিনয়ের বাবা। তিনি বলেন, ‘‘আমার পুত্রবধূ সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা অনেক পদক্ষেপ করেছেন। সৌদি সফর মাঝপথে ফেলে রেখে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে এসেছেন। এটা অনেক বড় পদক্ষেপ। আশা করছি, আমার ছেলের মৃত্যুর বিচার হবে।’’ পরিবার সূত্রে খবর, বিয়ে উপলক্ষে এক মাসের ছুটি নিয়েছিলেন বিনয়। মধুচন্দ্রিমায় তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল ইউরোপের কোনও দেশে। কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। তার পরেই ভূস্বর্গ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন নবদম্পতি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিনয়ের হত্যার খবর পায় পরিবার। ভয়ঙ্কর সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন হিমাংশী। তাঁর একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। সেখানে হিমাংশীকে বলতে দেখা গিয়েছে, ‘‘আমরা দু’জন ভেলপুরি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ এক জন এসে বলল, ‘ও মুসলমান নয়, গুলি কর।’’ সঙ্গে সঙ্গে গুলি চলে নৌসেনার লেফটেন্যান্টের উপর। তবে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁর স্ত্রীকে।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement