National news

টিকিটের লাইনে দীর্ঘ অপেক্ষা, এইমসে বাবার কাঁধেই শেষ নাবালিকা

গত ছ’দিন ধরেই প্রবল জ্বরে ভুগছিল পটনার কাজরা গ্রামের বাসিন্দা রামবালকের মেয়ে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ১৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মঙ্গলবার এইমস-এ যান রামবালক ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু, সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, চিকিৎসা শুরুর আগে আগে আউটপেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি)-তে নাম নথিভুক্ত করে কার্ড করাতে হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ১৫:৩৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

আগে নিয়ম মানতে হবে। তার পরে মিলবে চিকিৎসার সুযোগ। এমন আইনের ফাঁদে পড়ে মারা গেল পটনার এক নাবালিকা। শুধু তা-ই নয়, মৃত্যুর পর টাকার অভাবে মিলল না অ্যাম্বুল্যান্স। ফলে বাবাকেই বয়ে নিয়ে যেতে হল ন’বছরের মেয়ের মৃতদেহ। গোটা ঘটনায় কাঠগড়ায় পটনার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)।

Advertisement

ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল?

গত ছ’দিন ধরেই প্রবল জ্বরে ভুগছিল পটনার কাজরা গ্রামের বাসিন্দা রামবালকের মেয়ে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ১৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মঙ্গলবার এইমস-এ যান রামবালক ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু, সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, চিকিৎসা শুরুর আগে আগে আউটপেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি)-তে নাম নথিভুক্ত করে কার্ড করাতে হবে। সে কারণে তিনি ওই বহির্বিভাগের লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু, মেয়ের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। লাইনে দাঁড়ানো প্রায় সকলকে রামবালক কাতর আর্জি জানান, তাঁর মেয়ের চিকিৎসার জন্য আগে কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। কিন্তু, সে আবেদনে সাড়া দেননি কেউ। ওই লাইনেই মারা যায় ন’বছরের নাবালিকা। হাসপাতালের সাফায়ের দায়িত্বে থাকা এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী বলেন, “রেজিস্ট্রেশনের জন্য কাউন্টার ছাড়ার আগেই মারা যায় তাঁর মেয়েটি।” এর পরেই দুঃস্বপ্ন কাটেনি রামবালকের। মেয়ের মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের আবেদনে সাড়া দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারণ, পেশায় দিনমজুর রামবালক অ্যাম্বুল্যান্সের টাকা জোগাড় করতে পারেননি। এর পর নিজের কাঁধেই মেয়ের দেহ বয়ে নিয়ে যান রামবালক।

Advertisement

আরও পড়ুন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্টের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি দারুল উলুমের

ব্যাঙ্ক এবং অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত এই খুঁটিনাটি নিয়মগুলো জানা আছে?

বম্বে গ্রুপের রক্তের নাম কেন বম্বে গ্রুপ হল জানেন!

এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন এইমস কর্তৃপক্ষ। তবে বিনা চিকিৎসায় শিশুমৃত্যুর ঘটনার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন এইমস ডিরেক্টর প্রভাতকুমার সিংহ। তাঁর দাবি, “গুরুতর অসুস্থদের জন্য আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তার পরে রেজিস্ট্রেশন কার্ড তৈরি করা হয়। তবে এ রক যদি সত্যিই ঘটে তা আমি খতিয়ে দেখব।”

গোটা ঘটনাকে নিয়ে এর পরই রাজনীতির তরজা শুরু হয়েছে। ঘটনায় নীতীশ কুমার সরকারের সমালোচনা করে মুখ খুলেছেন আরজেডি প্রধান লালু্প্রসাদ যাদব। তাঁর অভিযোগ, হতদরিদ্রদের বিষয়ে উদাসীন রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পরিষেবা— বিহারে সব কিছুই ভেঙে পড়ছে। এর বর্তমান উদাহরণ এইমসে শিশুমৃত্যুর ঘটনা। গরিবদের চিকিৎসার জন্য কোনও সুবিধাই নেই। তাঁদের মৃত্যুর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। যেটা এ ক্ষেত্রে হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement