দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানায় আন্দোলনে যোগ দেওয়া এক কৃষক। ছবি: পিটিআই
৫ দফা বৈঠকের পর অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক। তার পরেও আন্দোলনের পথ থেকে টলানো যায়নি কৃষকদের। বরং আরও জোরদার আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে। পঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে প্রচুর কৃষক ট্রাক্টর নিয়ে রওনা দিয়েছেন দিল্লির দিকে। এর মধ্যেই আজ বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বিরোধী দলের নেতা-সাংসদরা। রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে সাংসদরা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করবেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনাতেও জট কাটেনি। অমিতের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। তাঁদের একটাই দাবি, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠক ছাড়া আগেই আরও ৫ দফা আলোচনা হয়েছে। আজ বুধবার ফের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, বুধবারের বৈঠকে তাঁরা যোগ দিচ্ছেন না। দুপুরে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করবেন।
দিল্লির সিঙ্ঘু, টিকরি-সহ একাধিক সীমানায় কৃষকদের লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভে চাপে রয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সেই চাপ আরও বাড়াতে বুধবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছেন বিরোধী সাংসদরা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুলের নেতৃত্বে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই সাংসদ ডি রাজা-সহ বিরোধীদের ওই প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপের আর্জি জানাবেন। তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিও জানিয়ে আসবেন রামনাথ কোবিন্দকে।
আরও পড়ুন: বঙ্গসফরে নড্ডার হামলা শুরু হচ্ছে মমতা-অভিষেকের খাসতালুক দিয়ে
কৃষক বিদ্রোহে আরও অক্সিজেন দিতে ট্রাক্টর নিয়ে দিল্লি ঘিরে ফেলার হুমকি আগেই দিয়েছিলেন কৃষকরা। ভারত বন্ধের পরের দিনই সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবার সকাল থেকে পঞ্জাব-হরিয়ানার বহু কৃষক দিল্লির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন ট্রাক্টর নিয়ে। ওই আন্দোলনে যাঁরা যোগ দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের দিল্লি-অমৃতসর হাইওয়ের উপর একটি পেট্রোল পাম্প থেকে বিনা পয়সায় ডিজেল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে শিরোমণি অকালি দল। দলের এক কর্মী বলেন, ‘‘আরও বেশি মানুষকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে এই ব্যবস্থা করেছি আমরা। পঞ্জাবের সাধারণ মানুষ এবং এনআরআই-দের সাহায্য নিয়ে বিনামূল্যে ডিজেল দেওয়া হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’-দের পাশেই টলি তারকারা, কী বলছেন তাঁরা?
পঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকরাই শুধু নয়, আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন পঞ্জাব-হরিয়ানার অধিকাংশ শহুরে নাগরিকও। সোশ্যাল মিডিয়ায় জনমত গঠনে তাঁরা যেমন সরব হয়েছেন, সশরীরেও অনেকে যোগ দিয়েছেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। তাঁদের বক্তব্য, ‘জমি না থাকলেও বিবেক আছে’। সেই কারণেই তাঁরা কৃষকদের পাশে রয়েছেন।