প্রতীকী ছবি।
খেত থেকে গম, সর্ষে তোলার সময় হয়ে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চলবে রবি ফসল কাটার কাজ। তাই দিল্লির সীমানায় আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলনে বসে থাকা কৃষকদের পঞ্জাব-হরিয়ানা-উত্তরপ্রদেশের গ্রামে ফেরা জরুরি। কিন্তু ঘরে ফসল তোলার এই সময়ে তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন যাতে হোঁচট না-খায়, তা নিশ্চিত করাই এখন চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন কৃষক সংগঠনের নেতারা।
ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েতের বক্তব্য, ফসল কাটা ও আন্দোলন একই সঙ্গে চলবে। সর্ব ভারতীয় কিসান সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘এই সময়ে আন্দোলন জারি রাখা কঠিন হবে। তবে এখন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর শুধু কৃষকদের আন্দোলন নয়। তা জন-আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।’’
দিল্লির সিংঘু, টিকরী, গাজিপুর সীমানায় বসে থাকা চাষিরা বলছেন, তাঁরা পালা করে আন্দোলনে বসবেন এবং ফসল কাটতে যাবেন। এক-একটি গ্রাম থেকে খুব বেশি হলে জনা পনেরো কৃষক প্রতিবাদ স্থলে থাকবেন। পঞ্জাব, হরিয়ানার কিছু গ্রামের চাষিরা আবার ঠিক করেছেন, তাঁরা
কয়েকটি গ্রাম মিলিয়ে একটি কমিটি তৈরি করবেন। সেই কমিটির মাধ্যমেই ঠিক হবে, কারা দিল্লির সীমানায় থাকবেন আর কারা গ্রামে থেকে ফসল তোলার কাজ করবেন। যাঁরা দিল্লির সীমানায় থাকবেন, তাঁদের জমির ফসল তোলার দায়িত্বও ভাগ করে নেবেন বাকিরা।
২৬-২৭ নভেম্বর থেকে দিল্লির সীমানায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও অবরোধ শুরু হয়েছে। হান্নান বলেন, ‘‘২৬ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের তিন মাস পূর্তি হবে। তাকে ঘিরে দ্বিতীয় বার আন্দোলন চাঙ্গা হবে। ঠিক যেমন ২৬ জানুয়ারির ট্র্যাক্টর মিছিলের সময়ে হিংসাকে হাতিয়ার করে পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপরে চাপ তৈরির চেষ্টা করায় আন্দোলন নতুন করে জেগে উঠেছিল।’’
কৃষক সংগঠনগুলি পশ্চিমবঙ্গ-সহ নানা রাজ্যে চাষিদের জমায়েতের পরিকল্পনা করছে। বৃহস্পতিবারই টিকায়েত সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। শনিবার কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরে কিসান মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেবেন।
কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনা ভেস্তে গেলেও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে বলেছেন, সরকার একটি ফোনের দূরত্বে রয়েছে। যদিও সরকারের দিক থেকে ফের আলোচনা শুরুর কোনও ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। তবে পঞ্জাবের স্থানীয় নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পরে কেন্দ্রের তরফ থেকে ফের ঘরোয়া ভাবে কিছু কৃষক নেতার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা হচ্ছে।