মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকের আগে পর্বত প্রমাণ কৃষি-ঋণ মাফে হিমশিম যোগী

ভোটের প্রচারে খোদ নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভাতেই সিদ্ধান্ত হবে কৃষি ঋণ মাফের। সেই সিদ্ধান্ত নিতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগেই প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ তিনি।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০৪:১০
Share:

ভোটের প্রচারে খোদ নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভাতেই সিদ্ধান্ত হবে কৃষি ঋণ মাফের। সেই সিদ্ধান্ত নিতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগেই প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ তিনি।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে তাঁর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নৃপেন্দ্র মিশ্র গত কাল রাতেই বৈঠক করেছেন যোগীর সঙ্গে। তিনিই এখন মোদী-যোগীর প্রধান সেতু। প্রাথমিক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের ঋণ মাফ করতেই লেগে যাবে প্রায় ৮০০০ কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগে উদ্যোগী হয়েও অখিলেশ যাদব সরকার সকলের ঋণ মাফ করতে পারেনি। হাজারো শর্ত চাপিয়ে ফি-বছর বোঝার পরিমাণ ১৬৫০ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছিল, যা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষও হজম করতে হয়েছিল সপা সরকারকে। কিন্তু প্রশ্ন— ধুঁকতে থাকা রাজ্যের কোষাগার থেকে এত টাকার বোঝা সামাল দেওয়া যাবে কী ভাবে?

আরও পড়ুন: আদিত্যনাথে আতঙ্ক মোছার চেষ্টায় বিজেপি

Advertisement

এ নিয়ে গত কাল শপথের পর মন্ত্রীদের নিয়ে আলোচনায় বসলেও সেটিকে ‘মন্ত্রিসভা’-র বৈঠক বলছে না যোগী সরকার। বিজেপি সূত্রের খবর, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকেও এখন নকশা তৈরি করতে বলেছেন মোদী। যাতে কেন্দ্র ঘুরপথে আর্থিক সাহায্য করতে পারে উত্তরপ্রদেশকে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহও মুখ ফস্কে বলে ফেলেছেন, এই বোঝা কেন্দ্রই বইবে। কিন্তু এতেই কেন্দ্রকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, বাকি রাজ্যগুলি কী দোষ করল? কংগ্রেস বলছে, রাহুল গাঁধী গোড়া থেকেই ঋণ মাফের দাবি তুলছেন কেন্দ্রের কাছে। কংগ্রেসের দাবি, এক বছরে ১২ হাজারের বেশি কৃষক আত্মহত্যা করছেন মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রে। অখিলেশের শ্লেষ, ‘‘কৃষি-ঋণ মকুব নিয়ে আমি ভালো করে এগোতে পারিনি। বিজেপি সেটা পারলে আমার থেকে কে বেশি খুশি হবে?’’

বিরোধীদের মতে, রাজ্য শুধু সমবায় ব্যাঙ্কের ঋণই মাফ করতে পারে। বাকি সব ব্যাঙ্কের ঋণ মাফ করার এক্তিয়ার কেন্দ্রের। অতীতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমনই দাওয়াই দিয়েছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে কৃষি ঋণ মাফে আপত্তি তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্যও। কিছু ব্যাঙ্ক-কর্তার মতে, উত্তরপ্রদেশে ভোটের সময় ঋণ মাফের কথা শুনে ঋণ শোধের পরিমাণও কমে গিয়েছে। মোদীর কাছে আরও সমস্যা হল, ক’দিন আগেই তিনি খয়রাতির অর্থনীতির বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। আর এখন তাঁকেই ঋণ মাফের পথ খুঁজতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেই আগামী কাল দিল্লি আসছেন যোগী। মোদী ও অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement