প্রতীকী ছবি।
ইউপিএ জমানায় সংসদে পাশ হওয়া জমি অধিগ্রহণ আইনের বিরুদ্ধে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিধানসভায় বিল পাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল বিজেপি। তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পদ্ম শিবিরের দেখানো সেই পথেই এ বার পথে হাঁটছে কংগ্রেস। আজ, রবিবার দলের হাই কম্যান্ড থেকে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে সংশ্লিষ্ট বিলের খসড়াও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিশেষ অধিবেশন ডেকে বিল পাশ করানোর। তবে সংবিধান অনুযায়ী সেই বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন। সেটা পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েই সংশয়ে হাত শিবির।
গত মাসে সংসদে তিনটি কৃষি বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ-সহ প্রায় সারা দেশে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। সেই পর্বেই কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে কৃষি আইনের বিরোধিতায় বিল পাশের উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন সনিয়া গাঁধী। সেই অনুযায়ী বিলের একটি খসড়া তৈরি করে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে পাঠিয়ে দিয়েছে হাই কম্যান্ড। দলীয় সূত্রে খবর, মূলত দু'টি সংস্থান রাখা হয়েছে বিলে। প্রথমত ওই আইন সংশ্লিষ্ট রাজ্যে কবে থেকে কার্যকর করা হবে, তা নির্ধারণ করবে রাজ্য সরকার। দ্বিতীয়ত, কোনও সংস্থার সঙ্গে কৃষকের চুক্তি হলে যাতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের কম দামে ফসল কিনতে না পারে ওই সংস্থা, তার বিধান থাকবে বিলে।
তবে মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে শাসক দলের সঙ্গে জোটে শামিল রয়েছে কংগ্রেস। এই রাজ্যগুলির বিধানসভাতেও এমন বিল আনা হবে কি না, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। দলের তরফেও এ বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। আবার পশ্চিমবঙ্গ বা কেরলের মতো রাজ্যও রয়েছে, যেখানে কংগ্রেস শাসক দল নয় বা জোটেও নেই, কিন্তু সেই রাজ্যগুলি কৃষি বিলের বিরুদ্ধে। ধোঁয়াশা রয়েছে এই রাজ্যগুলির শাসক দলের অবস্থান নিয়েও।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ‘কালা কানুন’ বাতিল করবে, কৃষি বিল নিয়ে আশ্বাস রাহুলের
ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী সংসদে পাশ হওয়া কোনও বিলকে বাইপাস করতে রাজ্য বিধানসভায় তার বিরুদ্ধে বিল পাশ করার সংস্থান রয়েছে। ২০১৫ সালে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের জমি অধিগ্রহণ আইনের বিরুদ্ধে একই রকম নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের প্রয়াত নেতা অরুণ জেটলি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সমস্যা হল, ওই বিলে রাজ্যপালের বদলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রপতি সই করলে, তবেই তা আইনে পরিণত হয়। রাষ্ট্রপতি বিলে সই না করে খারিজ করে দিতে পারেন। তবে রাষ্টপতিকেও বিল প্রত্যাখ্যানের কারণ জানাতে হবে। দেশ জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যেও যে ভাবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তিনটি কৃষি বিলে সই করেছেন, তাতে এই বিল বিধানসভায় পাশ হলেও রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে প্রত্যাখ্যানের আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ‘ড্রাইভিং সিটে’ কি এ বার প্রিয়ঙ্কা, জল্পনার জন্ম হাথরসে
হাথরসে গণধর্ষণ-হত্যা কাণ্ডের মধ্যেও প্রতিবাদ-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল বিভিন্ন কৃষক সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। তবে সে ভাবে সংবাদমাধ্যমে জায়গা পায়নি তা। রবিবার হাথরসে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা ঢুকতে পারার পরেই ফের সামনের সারিতে চলে এসেছে কৃষক আন্দোলন। এ দিনই পঞ্জাবের মোগা থেকে তিন দিনের ট্রাক্টর র্যালির সূচনা করেছেন রাহুল গাঁধী। বুঝিয়ে দিয়েছেন, পথে নেমে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলবেই। সেই আন্দোলনের পাশাপাশি এ বার সাংবিধানিক পথেও কৃষক বিলের মোকাবিলা শুরু করল দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।