বিচারপতি এনভি রমন।—ফাইল চিত্র।
কর্তব্য পালন করতে গেলে ক্ষমতাশালীদের কাছ থেকে চাপ আসবেই। কিন্তু সেই চাপের সামনে মাথা নোয়ানো চলবে না। বরং নৈতিকতায় অটল থাকতে হবে। বিগত কয়েক বছরে সর্বোচ্চ আদালতের একের পর এক সিদ্ধান্তে দেশের বিচার ব্যবস্থা যখন প্রশ্নের মুখে, সেইসময় এমনই বার্তা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের অন্যতম অভিজ্ঞ বিচারপতি এনভি রমন। তাঁর মতে, বিশ্বাস ও গ্রহণযোগ্যতা হাতে ধরিয়ে দেওয়ার বস্তু নয়, তা অর্জন করতে হয়। এই বিচারপতি তাঁর সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে কিছুদিন আগে অভিযোগ করেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এআর লক্ষণনের শোকসভায় এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি রমন। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের বিশ্বাসই বিচারব্যবস্থার সবচেয়ে বড় শক্তি। বিশ্বাস, আত্মবিশ্বাস এবং গ্রহণযোগ্যতা হাতে ধরিয়ে দেওয়ার বস্তু নয়। এগুলি অর্জন করতে হয়। ভাল ভাবে জীবন কাটানোর জন্য বিনয়, ধৈর্য, করুণা, নৈতিকতা এবং কাজের প্রতি উৎসাহ প্রয়োজন। কাজ করতে করতেই এ সব শিখতে হয়। নিজেকে পাল্টাতে হয়।’’
চাপের মুখে মাথা নত না করে, সমস্ত বাধা বিপত্তিকে প্রতিহতই করাই এক জন বিচারপতির কর্তব্য বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি রমন। তিনি বলেন, ‘‘নৈতিকতা বিসর্জন না দিয়ে নির্ভীক চিত্তে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বিচারপতির কর্তব্য। সব ধরনের চাপ ও বাধা বিপত্তির সামনে সাহসে ভর করে মাথা তুলে দাঁড়ানোই এক জন বিচারপতির ধর্ম। নৈতিকতাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ, কোনও পরিস্থিতিতেই তা ভোলা উচিত নয়।’’
আরও পড়ুন: ‘করোনার শিখর পেরিয়ে এসেছে দেশ, ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে অতিমারি’
আরও পড়ুন: গ্রামীণ ভারতের ৭৬ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পান না, দাবি গবেষণায়
হাইকোর্টের কাজকর্মের উপর নজর রাখা নিয়ে সম্প্রতি বিচারপতি রমনের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএস জগন রেড্ডি সরকারের। সেই নিয়ে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডেকে চিঠি লিখেছেন জগন। তাঁর অভিযোগ, হাইকোর্টের কাজে প্রভাব খাটাচ্ছেন বিচারপতি রমন। তেলুগু দেশম পার্টিকে সুবিধা করে দিতে বেশ কিছু মামলা নির্দিষ্ট কিছু বিচারকের হাতেই তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিচারপতি রমন তাঁর সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিষয়টিতে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। সেই পরিস্থিতিতে বিচারপতি রমনের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।